অস্ট্রেলিয়ার একটি শহরে বিষাক্ত মাশরুম মেশানো খাবার খেয়ে তিনজন নিহত হওয়ার ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে। অভিযুক্ত গৃহকর্ত্রী এরিন প্যাটারসনের বিরুদ্ধে আনা হত্যা মামলার বিচার চলছে।
সম্প্রতি, ওই দিনের ভোজের একমাত্র জীবিত ব্যক্তি, স্থানীয় এক পাদ্রী, আদালতের কাছে ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছেন।
২০২৩ সালের জুলাই মাসে, এরিন প্যাটারসনের বাড়িতে একটি ভোজের আয়োজন করা হয়েছিল। সেই অনুষ্ঠানে গরুর মাংসের ওয়েলিংটন পরিবেশন করা হয়।
এই ভোজসভায় অংশ নেওয়া কয়েকজনের কয়েকদিন পরই গুরুতর অসুস্থতা দেখা দেয়। এদের মধ্যে তিনজন—ডন প্যাটারসন, গেইল প্যাটারসন এবং হিদার উইলকিনসন—পরবর্তীতে মারা যান।
চতুর্থজন, ইয়ান উইলকিনসন, গুরুতর অসুস্থ হলেও সৌভাগ্যক্রমে প্রাণে বেঁচে যান। তিনি স্থানীয় কোরুম্বুরা ব্যাপটিস্ট চার্চের একজন যাজক।
আদালতে দেওয়া সাক্ষ্যে ইয়ান উইলকিনসন জানান, ঘটনার দিন তিনি এবং তাঁর স্ত্রী হিদারকে এরিন প্যাটারসন তাঁর বাড়িতে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। তিনি আরও বলেন, এরিনের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক খুব ঘনিষ্ঠ ছিল না, বরং পরিচিতের মতোই ছিল।
ভোজের সময় পরিবেশিত খাবার এবং এরিনের আচরণের বিষয়েও তিনি আলোকপাত করেন। উইলকিনসন জানান, খাবার খাওয়ার কিছুক্ষণ পরই এরিন তাঁর ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার কথা জানান। তিনি তাঁদের কাছে এই বিষয়ে পরামর্শও চেয়েছিলেন।
তবে, ঘটনার পরে উইলকিনসন এবং তাঁর স্ত্রী দুজনেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। ইয়ান জানান, প্রথমে তাঁর স্ত্রী অসুস্থ হন এবং পরে তাঁরও বমি হতে শুরু করে।
দ্রুত তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে থাকাকালীন সময়ে তাঁদের মাশরুমের বিষক্রিয়ার বিষয়ে জানানো হয়।
মামলার শুনানিতে, অভিযুক্ত এরিন প্যাটারসনের আইনজীবী ইয়ানের দেওয়া তথ্যের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। বিশেষ করে, খাবারের প্লেট এবং এরিনের ক্যান্সার ঘোষণার বিষয়ে তাঁর বক্তব্য খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
আইনজীবীর দাবি, ভোজের পরিবেশ স্বাভাবিক ছিল এবং এতে কোনো অস্বাভাবিকতা ছিল না।
এই মামলার তদন্তে জানা গেছে, ঘটনার কয়েক মাস আগে এরিন প্যাটারসন একটি খাদ্য শুকানোর যন্ত্র (food dehydrator) কিনেছিলেন। আদালত সেই সংক্রান্ত চালানও পরীক্ষা করেছে।
এই মামলার রায় এখনো আসেনি। বিচার প্রক্রিয়া এখনো চলমান এবং ইয়ান উইলকিনসনের সাক্ষ্য এই মামলার মোড় ঘোরাতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান