বাকরুদ্ধ বৃদ্ধের মর্মান্তিক খুন: স্তব্ধ প্রতিবেশীরা, জড়িত কে?

নিরব ক্যান্সার আক্রান্ত বৃদ্ধকে ছুরিকাঘাতে হত্যার অভিযোগে নারী গ্রেপ্তার।

যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে, ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন ধরে কথা বলতে অক্ষম এক বৃদ্ধকে ছুরিকাঘাতে হত্যার অভিযোগে ক্যাথরিন পেরি নামের এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার, ১৮ই এপ্রিল, শিকাগো পুলিশ বিভাগ নিশ্চিত করেছে যে, ২০১৪ সালের ১৪ই অক্টোবর ৬১ বছর বয়সী টনি ল্যান্ডার্সের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ৩৪ বছর বয়সী ক্যাথরিন পেরির বিরুদ্ধে ফার্স্ট-ডিগ্রি মার্ডার এবং অগ্নিসংযোগের চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে।

পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, ১৫ই এপ্রিল, ২০২৫ তারিখে স্থানীয় সময় অনুযায়ী, শহরের ১৮০০ ব্লক ই. ৭১স্ট্রিট এলাকা থেকে ‘এরিয়া ওয়ান হোমিসাইড ইনভেস্টিগেশন সাপোর্ট টিম’-এর সদস্যরা তাকে গ্রেপ্তার করে। নিহত টনি ল্যান্ডার্সের বোন কিম ল্যান্ডার্স, স্থানীয় একটি টেলিভিশন চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ঘটনার দিন তার ভাইয়ের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

কিম জানান, তার ভাই টনি ছিলেন বাকশক্তিহীন এবং ফুসফুসের ক্যান্সারে ভুগছিলেন। তিনি সবসময় ভাইয়ের দেখাশোনা করতেন। ভাইয়ের অ্যাপার্টমেন্টে গিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে আবিষ্কার করেন কিম। তিনি জানান, “আমি যখন পেছনের দরজা খুললাম, তখন পায়ের ছাপ দেখতে পাই। লাল রঙের পায়ের ছাপ। এরপর আমি আবার তাকালাম, আরও একটি পায়ের ছাপ দেখলাম। এরপর আমার ভাইটিকে সেখানে শোয়া অবস্থায় দেখি। দরজার চারপাশে রক্ত ছড়িয়ে ছিল।”

কান্নাজড়িত কণ্ঠে কিম আরও বলেন, “আমি তার নাম ধরে ডাকতে শুরু করলাম। চিৎকার করে বললাম, ‘কেউ তাকে মেরে ফেলেছে! কেউ তাকে খুন করেছে!’ চারিদিকে শুধু রক্ত।”

যদিও পুলিশ এ বিষয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য জানায়নি, তবে স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমকে পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, ছুরিকাঘাতের পাশাপাশি তাদের প্রিয়জনকে মারধরও করা হয়েছিল। নিহত টনির আরেক বোন মেলিসা উইনস্টন জানান, “একজন নিরীহ, অসহায় মানুষকে হত্যা করা হলো। সে তো নিজেকে রক্ষা করারও ক্ষমতা রাখত না। সে দুর্বল ছিল, অসুস্থ ছিল।”

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, টনি ল্যান্ডার্সের ফুসফুসে ক্যান্সার ধরা পড়ে ২০২২ সালে এবং তার স্বরযন্ত্র অপসারণের পর তিনি কথা বলার ক্ষমতা হারান।

মেলিসা আরও যোগ করেন, “আমার ভাই এভাবে মারা যাওয়ায় আমি খুবই দুঃখিত। তার এমন পরিণতি হওয়া উচিত ছিল না।”

পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, তাদের ধারণা ছিল, টনির মৃত্যুর পেছনে দায়ী ব্যক্তিটিকে তিনি চিনতেন। পরে পুলিশ জানায়, পেরির বিরুদ্ধে আনা অগ্নিসংযোগের চেষ্টার অভিযোগেও অভিযুক্ত একজন পরিচিত ব্যক্তি।

এই ঘটনার পেছনের কারণ এখনো পর্যন্ত জানা যায়নি। শুক্রবার আদালতে পেরিকে হাজির করা হয়।

তথ্য সূত্র: পিপলস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *