মিয়ানমারে ভূমিকম্প: ধ্বংসস্তূপে বাড়ছে মৃতের মিছিল!

ভয়াবহ ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত মায়ানমার: মৃতের সংখ্যা ১,৬০০ ছাড়িয়েছে, সাহায্য চেয়ে রেড ক্রস।

শুক্রবার মায়ানমারে আঘাত হানা ৭.৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে এবং রবিবার পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী, মৃতের সংখ্যা ১,৬৪৪ জনে দাঁড়িয়েছে।

আহত হয়েছেন ৩,৪০০ জনের বেশি, এছাড়া এখনো ১৩৯ জন নিখোঁজ রয়েছেন। ভূমিকম্পের কারণে মিয়ানমারের পুরাতন স্থাপত্য ও অবকাঠামো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ভূমিকম্পের কেন্দ্র ছিল মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়ের (Mandalay) কাছে। ভূমিকম্পের তীব্রতা এত বেশি ছিল যে, এর কম্পন থাইল্যান্ডেও (Thailand) অনুভূত হয়েছে।

থাইল্যান্ডে ভূমিকম্পের কারণে ১৮ জন নিহত এবং ৩৩ জন আহত হয়েছেন, এছাড়া এখনো ৭৮ জন নিখোঁজ রয়েছেন।

ভূমিকম্পে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছে মান্দালয়, সাগাইং (Sagaing), ম্যাগওয়ে (Magway), বাগো (Bago) এবং শান (Shan) রাজ্য। ভূমিকম্পের কারণে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় উদ্ধার ও ত্রাণকার্য ব্যাহত হচ্ছে।

জানা গেছে, মান্দালয় ও রাজধানী নেপিদোতে (Naypyidaw) বিমানবন্দরগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

ভূমিকম্পের ফলে মান্দালয় ও সাগাইংয়ের মধ্যে সংযোগ স্থাপনকারী ঐতিহাসিক আভা ব্রিজ (Ava Bridge), মান্দালয় বিশ্ববিদ্যালয় (Mandalay University) এবং বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী স্থাপনার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অফ রেড ক্রস অ্যান্ড রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিজ (International Federation of Red Cross and Red Crescent Societies) জানিয়েছে, ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার জন্য তারা জরুরি ভিত্তিতে সাহায্যের আবেদন জানিয়েছে।

সংস্থাটি জানিয়েছে, আগামী ২৪ মাসের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত ২,০০০ পরিবারের ১,০০,০০০ মানুষের জন্য তারা ১০০ মিলিয়ন সুইস ফ্রাঙ্ক (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১২০০ কোটি টাকা) সাহায্যের আবেদন করেছে।

ভূমিকম্পের কারণে সৃষ্ট এই মানবিক বিপর্যয়ে প্রতিবেশী দেশ হিসেবে বাংলাদেশের মানুষ গভীরভাবে শোকাহত। বাংলাদেশের ভূমিকম্পের অভিজ্ঞতা রয়েছে, তাই এখানকার মানুষ জানে প্রাকৃতিক দুর্যোগে মানুষের জীবন কতটা দুর্বিষহ হয়ে উঠতে পারে।

এমতাবস্থায়, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও বিভিন্ন সাহায্য সংস্থার এগিয়ে আসাটা অত্যন্ত জরুরি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মিয়ানমার যে অঞ্চলে অবস্থিত, সেখানে ভারতীয় এবং সুন্দা প্লেটের সংযোগস্থলে ভূমিকম্পের প্রবণতা বেশি। তাই ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্যোগের ঝুঁকিও থেকে যায়।

তথ্যসূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *