মিয়ানমারে ভয়াবহ ভূমিকম্প: মৃতের সংখ্যা ২,০০০ ছাড়িয়েছে, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা বিপর্যস্ত।
গত শুক্রবার মিয়ানমারে আঘাত হানা শক্তিশালী ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ২,০০০ ছাড়িয়ে গেছে। জাতিসংঘের স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) জানিয়েছে, দেশটির স্বাস্থ্য ব্যবস্থা বর্তমানে চরম চাপের মধ্যে রয়েছে এবং আহতদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে।
ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো বহু মানুষ আটকা পড়ে আছে, ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল দেশটির মধ্যাঞ্চলে। এর প্রভাবে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মান্দালয়সহ (Mandalay) আশেপাশের এলাকাগুলো।
মান্দালয়ে ১,০০০ শয্যা বিশিষ্ট একটি জেনারেল হাসপাতালও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যে কারণে রোগীদের বাইরে চিকিৎসা দিতে হচ্ছে।
শহরের বহু মানুষ ঘরবাড়ি হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে। উদ্ধারকর্মীরা ধ্বংসস্তূপ থেকে জীবিতদের উদ্ধারের জন্য প্রাণপণে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
তবে, যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়া এবং বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে সেনাবাহিনীর চলমান সংঘাতের কারণে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (USGS)-এর পূর্বাভাস অনুযায়ী, মৃতের সংখ্যা ১০,০০০ ছাড়িয়ে যেতে পারে।
ভূমিকম্পে অন্তত তিনটি হাসপাতাল সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে এবং আরও ২২টি হাসপাতালের আংশিক ক্ষতি হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-এর পক্ষ থেকে জরুরি সহায়তা হিসেবে প্রায় ৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (প্রায় ৮৪ কোটি টাকার বেশি) সাহায্যের আবেদন জানানো হয়েছে।
মিয়ানমারের জান্তা সরকার এক সপ্তাহের শোক ঘোষণা করেছে এবং জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়েছে।
চীন, রাশিয়া, ভারত, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশ এরই মধ্যে ত্রাণ ও উদ্ধারকর্মী পাঠিয়েছে।
ভূমিকম্পের কারণে সৃষ্ট এই মানবিক বিপর্যয় দেশটির জন্য একটি বড় সংকট তৈরি করেছে।
কারণ, এর আগে থেকেই মিয়ানমার রাজনৈতিক অস্থিরতা ও গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে ছিল। ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে দেশটিতে অস্থিরতা আরও বেড়েছে।
মানবিক সহায়তা সংস্থাগুলো জানিয়েছে, ভূমিকম্পের আগে থেকেই প্রায় ২ কোটি মানুষের জরুরি সাহায্যের প্রয়োজন ছিল। এই দুর্যোগ সেই সংকটকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
অন্যদিকে, ভূমিকম্পের কারণে প্রতিবেশী দেশ থাইল্যান্ডেও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
রাজধানী ব্যাংককের একটি নির্মাণাধীন ভবন ধসে অন্তত ১৯ জন নিহত হয়েছে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান