মিয়ানমারে ভূমিকম্প: মৃতের সংখ্যা ১৬০০ ছাড়াল, সাহায্যের জন্য আকুতি!

মিয়ানমারে ভূমিকম্প: মৃতের সংখ্যা ১৬০০ ছাড়িয়েছে, মানবিক সহায়তা পাঠাচ্ছে বিভিন্ন দেশ।

মিয়ানমারের মধ্যাঞ্চলে ৭.৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানার পর মৃতের সংখ্যা ১৬০০ ছাড়িয়ে গেছে। আহত হয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। ভূমিকম্পে দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয় এবং এর আশেপাশের এলাকা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ভূমিকম্পের পরে ৬.৪ এবং ৫.১ মাত্রার আরও দুটি কম্পন অনুভূত হয়, যা পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করে তুলেছে।

ভূমিকম্পের পর পরই প্রতিবেশী দেশগুলোসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো দ্রুত সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে। ভারত, চীন, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড এবং রাশিয়া ত্রাণ ও উদ্ধারকারী দল পাঠিয়েছে।

চীনের পাঠানো জরুরি ত্রাণ সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের সরঞ্জাম ও চিকিৎসা সামগ্রী। চীন প্রায় ১৩.৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৪৭ কোটি টাকার সমান) জরুরি সহায়তা প্রদানের ঘোষণা দিয়েছে।

ভারতের পক্ষ থেকে একটি ফিল্ড হাসপাতাল ইউনিট এবং উদ্ধারকারী দল পাঠানো হয়েছে। রাশিয়ার জরুরি পরিস্থিতি বিষয়ক মন্ত্রকও উদ্ধারকর্মী ও ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে মিয়ানমারে পৌঁছেছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) দুবাই থেকে তাদের লজিস্টিক হাবের মাধ্যমে জরুরি চিকিৎসা সামগ্রী পাঠাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাজ্যও জরুরি সহায়তা পাঠিয়েছে।

তবে, দুর্গত এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, সরকারি সাহায্য পর্যাপ্ত নয়। অনেক স্থানে এখনো উদ্ধারকর্মী পৌঁছায়নি। ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলের কাছাকাছি সাগাইং শহরে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চলছে।

সেখানকার অধিবাসীরা জানিয়েছেন, অনেক ভবন ধসে পড়েছে এবং খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। মান্দালয়ে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকদের ছোট ছোট দল উদ্ধার কাজ চালাচ্ছে, তবে তাদের প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের অভাব রয়েছে।

জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সমন্বয় অফিস (OCHA) জানিয়েছে, ত্রাণ তৎপরতা ব্যাহত হচ্ছে কারণ ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে চিকিৎসা সরঞ্জামের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে, মিয়ানমারের সামরিক প্রধান মিন অং হ্লাইং ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সমন্বিত ও কার্যকর চিকিৎসা সহায়তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন।

ভূমিকম্পের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষেরা খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিতে বাধ্য হচ্ছেন। অনেকেই তাদের বাড়িঘরের পাশে বা তাঁবুতে আশ্রয় নিয়েছেন, কারণ তারা এখনো ভূমিকম্পের পরবর্তী কম্পনের আতঙ্কে রয়েছেন।

তথ্য সূত্র: আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *