মিয়ানমারে ভূমিকম্প: ধ্বংসস্তূপ থেকে জীবিত উদ্ধারে মিলল আশা!

মিয়ানমারে ভূমিকম্প: ধ্বংসস্তূপের নিচে অলৌকিক উদ্ধার, মৃতের সংখ্যা বাড়ছে।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমারে ৭.৭ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্পের পাঁচ দিনের বেশি সময় পর ধ্বংসস্তূপ থেকে দুই ব্যক্তিকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত হওয়া ভবনগুলোর নিচে আটকে পড়া ব্যক্তিদের জীবিত উদ্ধারের ঘটনা বিরল, যা এই মুহূর্তে সেখানকার মানুষের জন্য আশা জাগাচ্ছে।

গত বুধবার (১৭ এপ্রিল, ২০২৪) দেশটির ম্যান্ডালয় শহরে উদ্ধারকর্মীরা একটি ধসে পড়া হোটেলের ধ্বংসস্তূপ থেকে ৫৩ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে জীবিত উদ্ধার করে। উদ্ধারকারী দলে মিয়ানমারের অগ্নিনির্বাপক কর্মী এবং চীনের একটি উদ্ধারকারী দলও ছিল। ঘটনার ১২৫ ঘণ্টা পর ওই ব্যক্তিকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।

একই দিনে সাগাইং শহরেও ৪০ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয় একটি হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলছে এবং তিনি এখন “ভালো আছেন” বলে জানা গেছে।

সামরিক জান্তা সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী, উদ্ধার কাজ সহজ করার জন্য সশস্ত্র গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে তাদের অভিযান সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। তবে, এই যুদ্ধবিরতি কত দিন কার্যকর থাকবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়।

ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা এরই মধ্যে তিন হাজারের বেশি ছাড়িয়ে গেছে। কর্তৃপক্ষের আশঙ্কা, ধ্বংসস্তূপের নিচে আরও বহু মানুষ আটকা পড়ে আছেন, ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

মানবিক সংস্থাগুলো দুর্গম এলাকাগুলোতে জরুরি ত্রাণ সরবরাহের ওপর জোর দিচ্ছে।

জাতিসংঘের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) সতর্ক করে বলেছে, হাসপাতালগুলো আহতদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় অস্থায়ী তাঁবু তৈরি করে সেখানে জরুরি চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে।

WHO এর একজন জরুরি দলের সদস্য জানিয়েছেন, “এই তাঁবুগুলোতে ভাঙা হাড়, ক্ষত এবং মানসিক আঘাত পাওয়া রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এগুলো মোবাইল স্বাস্থ্য ক্লিনিকের মতো কাজ করছে, যেখানে কোনো দেয়াল নেই, সেখানেই চিকিৎসা সেবা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।”

ডাক্তার উইদাউট বর্ডারস (MSF) জানিয়েছে, ভূমিকম্পে প্রায় ৫০০টি ভবন সম্পূর্ণ ধসে পড়েছে এবং আরও ৮০০টি ভবনের আংশিক ক্ষতি হয়েছে, যা উদ্ধারকর্মীদের কাজকে আরও কঠিন করে তুলেছে।

এদিকে, ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল মিয়ানমারের প্রতিবেশী দেশ থাইল্যান্ডেও এর প্রভাব পড়েছে। থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে নির্মাণাধীন একটি বহুতল ভবন ধসে পড়ার পর সেখানেও উদ্ধারকাজ চলছে।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল, ২০২৪) ব্যাংককে ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়া কয়েকজনের জীবিত থাকার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। ব্যাংককের গভর্নর চ্যা chart সিটিপান্ত জানিয়েছেন, উদ্ধারকর্মীরা ধ্বংসস্তূপের ভেতরে শব্দ শুনেছেন, যা আটকে পড়া ব্যক্তিদের পরিবারের জন্য আশা জাগাচ্ছে।

মিয়ানমারের এই ভূমিকম্প বাংলাদেশের জন্য একটি উদ্বেগের বিষয়। বাংলাদেশও ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা, এবং অতীতে বিভিন্ন সময়ে ভূমিকম্পের শিকার হয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে, আন্তর্জাতিক সাহায্য এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব আরও একবার প্রমাণিত হয়েছে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *