রুশ প্রতিবাদী শিল্পী ও পি*সি রায়টের সদস্য নাদিয়া টোলোকনিকোভা। ছবি: সংগৃহীত।
রাশিয়ার শিল্পী নাদিয়া টোলোকনিকোভা, যিনি ‘পুসি রায়ট’ নামক প্রতিবাদী দলের একজন সদস্য, বর্তমানে বার্লিনে তার শিল্পকর্ম নিয়ে আলোচনায় রয়েছেন। তার শিল্পকর্ম, রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে একটি নতুন চিত্র ফুটে উঠেছে, যা বিশ্বজুড়ে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
টোলোকনিকোভা এবং তার দল ২০১২ সালে মস্কোর একটি গির্জায় ‘পাঙ্ক প্রেয়ার’ পরিবেশন করে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন। এই ঘটনার জেরে তাকে কারাবন্দী করা হয়। পুতিন সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের অংশ হিসেবে এই কাজটি ছিল অত্যন্ত সাহসী।
টোলোকনিকোভার কারাজীবনের অভিজ্ঞতা, শিল্পচর্চা এবং সমাজের প্রতি তার দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
বার্লিনের গ্যালারি নাগেল ড্রাক্সলারে (Galerie Nagel Draxler) ‘ওয়ান্টেড’ (Wanted) শিরোনামে তার বর্তমান প্রদর্শনীতে, শিল্পীর কারাকক্ষের একটি প্রতিকৃতি, পুতিনের সমালোচনা করে তৈরি করা একটি চলচ্চিত্র এবং ধর্মীয় চিত্রের এমন কিছু চিত্রকর্ম রয়েছে যেখানে পুসি রায়টের পরিচিত মুখোশ ব্যবহার করা হয়েছে।
টোলোকনিকোভা তার সাক্ষাৎকারে বলেন, তিনি গোঁড়া অর্থোডক্স চার্চকে ঘৃণা করেন না, তবে এর মধ্যে থাকা দুর্নীতিগ্রস্ত দিকগুলো অপছন্দ করেন। তিনি উল্লেখ করেন যে, বিচারকের কাছে এই বিষয়গুলো বোঝানো কঠিন ছিল, যিনি তার কথা শুনতে রাজি ছিলেন না।
আর্টের মাধ্যমে প্রতিবাদের ধারণা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে টোলোকনিকোভা বলেন, শিল্প মানুষকে আশা দিতে পারে। তবে তিনি তার হতাশার কথাও গোপন করেননি।
ইউক্রেন যুদ্ধের শুরু থেকে তিনি নিজেকে পরাজিত মনে করেন। তবে তিনি এখনো শিল্পকে ভালোবাসেন এবং এর শক্তিতে বিশ্বাস করেন।
টোলোকনিকোভা বর্তমানে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ‘অনলিফ্যানস’-এ (OnlyFans) কাজ করছেন, যেখানে তিনি সাবস্ক্রিপশন-এর মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করেন। তিনি জানান, এর মাধ্যমে তিনি তার জীবনের প্রয়োজনীয়তা মেটান।
টোলোকনিকোভা এবং তার সঙ্গীরা ২০১৪ সালে ‘মিডিয়া জোন’ নামে একটি স্বাধীন সংবাদমাধ্যম তৈরি করেন, যা রাশিয়ার কারাগারের পরিস্থিতি এবং ইউক্রেন যুদ্ধ সম্পর্কিত খবর প্রকাশ করে। বর্তমানে এটি আর্থিক সমস্যার মধ্যে রয়েছে।
নাদিয়া টোলোকনিকোভা তার শিল্পকর্মের মাধ্যমে সমাজের অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ অব্যাহত রেখেছেন। তার কাজ শুধু রাশিয়ার গণ্ডিতেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং বিশ্বজুড়ে মুক্তচিন্তা ও প্রতিবাদের একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
তথ্য সূত্র: The Guardian