মহাকাশে ৯ মাস: প্রথম মুখ খুললেন দুই নভোচারী, ফিরতেই দিলেন চাঞ্চল্য!

## নভোচারীদের মহাকাশ অভিযান: অপ্রত্যাশিত দীর্ঘ যাত্রার শেষে পৃথিবীতে ফেরা

মহাকাশ গবেষণার ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা হলো নাসা-র দুই নভোচারীর দীর্ঘ, অপ্রত্যাশিত মহাকাশ মিশন। বোয়িং স্টারলাইনার মহাকাশযানের সমস্যা তাদের নির্ধারিত এক সপ্তাহের পরিবর্তে প্রায় নয় মাস আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (International Space Station – ISS) কাটাতে বাধ্য করে।

সম্প্রতি পৃথিবীর বুকে ফিরে আসা এই নভোচারীরা তাদের অভিজ্ঞতার কথা সংবাদ মাধ্যমের সামনে তুলে ধরেছেন।

নাসা-র নভোচারী সুনি উইলিয়ামস এবং বুচ উইলমোর-এর এই মিশনটি ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা, যেখানে স্টারলাইনার মহাকাশযানের কার্যকারিতা যাচাই করার কথা ছিল।

কিন্তু অপ্রত্যাশিতভাবে যানে ত্রুটি দেখা দেওয়ায় তারা দীর্ঘ সময় ধরে পৃথিবীর কক্ষপথে অবস্থিত আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে আটকা পড়েন। তাদের প্রত্যাবর্তনের অপেক্ষায় ছিলেন বিশ্ববাসী।

অবশেষে, গত ১৮ই মার্চ, এই দুই নভোচারী পৃথিবীতে ফিরে আসেন এবং তাদের দীর্ঘ ভ্রমণের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন।

নভোচারীদের দীর্ঘ সময় ধরে মহাকাশে আটকে থাকার বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনেও আলোচনা-সমালোচনা হয়। অনেকে তাদের ‘ফিরে আসা হয়নি’ বলে অভিহিত করেন।

তবে, নভোচারীরা নিজেরাই এই ধরনের মন্তব্য প্রত্যাখ্যান করেছেন। তাদের মতে, তারা সবসময়ই পৃথিবীতে ফিরতে চেয়েছেন এবং তাদের দীর্ঘ এই যাত্রা থেকে অনেক কিছু শেখার আছে।

তারা জানান, মহাকাশ স্টেশনে থাকার সময় তারা অন্যান্য নভোচারীদের মতোই বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

এই মিশনে ফেরার পথে তাদের সাহায্য করে স্পেসএক্স-এর ক্রু-৯ মিশন। ফিরে আসার পর সুনি উইলিয়ামস জানান, তিনি তার স্বামী এবং পোষা কুকুরদের সঙ্গে মিলিত হওয়ার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন।

তিনি আরও জানান, মহাকাশ থেকে ফিরে আসার এক সপ্তাহের মধ্যেই তিনি প্রায় ৫ কিলোমিটার দৌড়াতে পেরেছেন, যা তাদের প্রশিক্ষণদাতাদের কঠোর পরিশ্রমের ফল।

নভোচারীদের এই দীর্ঘ ভ্রমণের সময় তাদের মনোবল ছিল প্রশংসনীয়। তারা আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের কর্মীদের সঙ্গে একাত্ম হয়ে কাজ করেছেন।

তাদের এই মিশনে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং মহাকাশ ভ্রমণের গুরুত্ব বিশেষভাবে ফুটে উঠেছে।

মিশন কমান্ডার হিসেবে সুনি উইলিয়ামস-এর নেতৃত্বে নভোচারীরা প্রমাণ করেছেন, প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও কিভাবে ইতিবাচক মানসিকতা বজায় রেখে কাজ করা যায়।

তাদের এই অভিজ্ঞতা শুধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রেই নয়, বরং মানুষের অদম্য ইচ্ছাশক্তি ও সহনশীলতার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

তথ্যসূত্র: সিএনএন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *