আবারও স্টারলাইনারে! ফিরে আসা নভোচারীদের সিদ্ধান্তে চমক!

**নাসার নভোচারীরা বোয়িং-এর স্টারলাইনারে আবারও উড়তে প্রস্তুত**

আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (International Space Station – ISS) দীর্ঘ সময় কাটানোর পর সম্প্রতি ফিরে আসা নভোচারী বাচ উইলমোর এবং সুনি উইলিয়ামস জানিয়েছেন, তারা বোয়িং কোম্পানির স্টারলাইনার প্রোগ্রামের ওপর আস্থা রাখছেন। তাদের মতে, স্টারলাইনারে কিছু সমস্যা হলেও সেগুলো সমাধান করা সম্ভব।

তাই তারা পুনরায় এই মহাকাশ যানে চড়তে প্রস্তুত।

গত বছর বোয়িংয়ের স্টারলাইনারে করে তাদের পৃথিবীতে ফেরার কথা ছিল, কিন্তু কিছু ত্রুটির কারণে তা সম্ভব হয়নি। অবশেষে স্পেসএক্স (SpaceX) ক্যাপসুলে করে তারা নিরাপদে পৃথিবীতে ফিরে আসেন। উইলমোর এবং উইলিয়ামস তাদের দীর্ঘ এই মিশনে স্টারলাইনারের ত্রুটিগুলির জন্য নিজেদেরও কিছুটা দায়ী মনে করেন।

তারা জানান, ভবিষ্যতে এই সমস্যাগুলো কাটিয়ে উঠতে তারা প্রস্তুত।

নভোচারীরা জানান, তাদের মহাকাশ যাত্রা অপ্রত্যাশিতভাবে দীর্ঘ হয়েছিল। প্রথমে স্টারলাইনারের থ্রাস্টারে (thruster) ত্রুটি দেখা দেয় এবং হিলিয়াম গ্যাস লিক করতে শুরু করে। এর ফলে তাদের পৃথিবীতে ফিরতে দেরি হয়।

নাসা (NASA) জানায়, এই সমস্যার কারণে স্টারলাইনারে করে নভোচারীদের ফিরিয়ে আনা নিরাপদ ছিল না। তাই তাদের স্পেসএক্সের ক্যাপসুলে করে ফেরত আনা হয়।

বাস্তবে, তাদের এই মহাকাশ অভিযান প্রায় ২৯০ দিন স্থায়ী হয়েছিল, যা পূর্বপরিকল্পনার চেয়ে অনেক বেশি। এমনকি তাদের প্রত্যাবর্তনের পরে, প্রতিস্থাপন নভোচারীদের উৎক্ষেপণও বিলম্বিত হয়, যা মিশনের সময়সীমা আরও বাড়িয়ে দেয়।

নভোচারী উইলমোর বলেন, “আমরা সবাই এই ঘটনার জন্য দায়ী। আমরা সবাই এর অংশীদার।” তিনি আরও যোগ করেন, “আমরা স্টারলাইনারের সব সমস্যা সমাধান করব এবং এটি সফল করব।”

উইলিয়ামসও এই মিশনে স্টারলাইনারের সাফল্যের বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী। তিনি বলেন, স্টারলাইনারের “প্রচুর সম্ভাবনা” রয়েছে এবং তারা এর সাফল্য দেখতে চান।

জানা গেছে, নভোচারীরা বোয়িং কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের অভিজ্ঞতার কথা জানাবেন। এই আলোচনার মূল উদ্দেশ্য হল, ভবিষ্যতে যেন এই ধরনের সমস্যাগুলো এড়ানো যায় সেই বিষয়ে একটি সুস্পষ্ট ধারণা তৈরি করা।

নাসা জানিয়েছে, স্টারলাইনারের থ্রাস্টারের সমস্যাগুলো এখনো পুরোপুরি বোঝা যায়নি। বিষয়টি সমাধানে গ্রীষ্মকালে আরও কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে। প্রকৌশলীরা যদি থ্রাস্টার এবং গ্যাস লিকের সমস্যাগুলো সমাধান করতে পারে, তাহলে স্টারলাইনার পুনরায় ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত হবে।

সম্ভবত নভোচারীদের পাঠানোর আগে কার্গো নিয়ে আরেকটি পরীক্ষামূলক উড্ডয়ন পরিচালনা করা হবে।

বোয়িং স্টারলাইনারের এই প্রতিকূলতা সত্ত্বেও, নাসা তাদের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার ওপর অবিচল রয়েছে। তাদের লক্ষ্য হল, মহাকাশ স্টেশনের জন্য দুটি মার্কিন কোম্পানির মাধ্যমে যাত্রী পরিবহন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। যদিও, আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনটি পাঁচ বছরের মধ্যে পরিত্যক্ত হওয়ার কথা রয়েছে এবং এর পরিবর্তে ব্যক্তিগত মালিকানাধীন পরীক্ষাগার স্থাপন করা হবে।

মহাকাশ গবেষণা একটি আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং প্রযুক্তিগত অগ্রগতির গুরুত্বপূর্ণ দিক। এই ধরনের গবেষণা থেকে প্রাপ্ত জ্ঞান আমাদের আবহাওয়ার পূর্বাভাস, যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে সহায়তা করতে পারে।

তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *