ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে নাসায় হাহাকার, জলবায়ু গবেষণাগার বন্ধের মুখে!

শিরোনাম: জলবায়ু গবেষণা খাতে সম্ভাব্য কোপ: বাংলাদেশের জন্য উদ্বেগের কারণ

জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে জর্জরিত বাংলাদেশের জন্য দুঃসংবাদ বয়ে আনতে পারে যুক্তরাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সম্ভাব্য বিলুপ্তি। নাসা’র (NASA) জলবায়ু গবেষণা বিষয়ক অন্যতম প্রধান কেন্দ্র, গডার্ড ইনস্টিটিউট ফর স্পেস স্টাডিজ (GISS)-এর কার্যক্রম গুটিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব এসেছে।

এই পদক্ষেপ বাস্তবায়িত হলে, তা বিশ্বজুড়ে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে গবেষণার ক্ষেত্রে বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে, এবং বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বাংলাদেশ।

যুক্তরাষ্ট্র সরকারের পক্ষ থেকে নাসা’র বাজেট কাটছাঁটের প্রস্তাব করা হয়েছে, যার ফলে জিআইএসএস-এর মতো গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা কেন্দ্রটি হয়তো তাদের স্বকীয়তা হারাবে।

প্রস্তাবিত পরিকল্পনা অনুযায়ী, জিআইএসএস-এর কিছু কাজ নাসা’র বৃহত্তর পরিবেশ বিষয়ক মডেলিং প্রকল্পের সঙ্গে একত্রিত করা হবে। এই সিদ্ধান্তের ফলে, বর্তমানে কর্মরত বিজ্ঞানীরা তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন। নিউইয়র্ক সিটি থেকে কর্মীদের সরিয়ে নেওয়ায় তাদের মধ্যে এক ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই গবেষণা কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে গেলে বৈশ্বিক জলবায়ু বিজ্ঞান, বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব পর্যবেক্ষণে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্ব দুর্বল হয়ে পড়বে।

জিআইএসএস-এর বিজ্ঞানীরা দীর্ঘদিন ধরে পৃথিবীর জলবায়ু পরিবর্তনের কারণ ও প্রভাব নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা করে আসছেন। তাদের গবেষণায় বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি, বৃষ্টিপাতের ধরন, এবং চরম আবহাওয়ার পরিবর্তন সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।

এই গবেষণা কেন্দ্রটি জলবায়ু মডেলিংয়ের মাধ্যমে ভবিষ্যতের পূর্বাভাস দিতে সক্ষম, যা নীতিনির্ধারক এবং সাধারণ মানুষের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

আবহাওয়াবিদ ও জলবায়ু বিজ্ঞানীরা মনে করেন, জিআইএসএস-এর স্বাধীনতা তাদের গবেষণার জন্য সহায়ক ছিল। এই কেন্দ্রে কর্মরত বিজ্ঞানীরা দীর্ঘদিন ধরে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণ ও প্রভাব নিয়ে কাজ করে আসছেন।

জিআইএসএস-এর বিজ্ঞানীরা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবগুলো চিহ্নিত করতে এবং এর কারণ অনুসন্ধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তাদের প্রকাশিত গবেষণাগুলো বিশ্বজুড়ে জলবায়ু বিজ্ঞানীদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বাজেট প্রস্তাব অনুযায়ী, নাসা’র আর্থ সিস্টেম মডেলিং কার্যক্রম চারটি ভিন্ন কেন্দ্রে একত্রিত করা হবে, যেখানে জিআইএসএস-এর “মূল সক্ষমতাগুলি” প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবহার করা হবে।

তবে, একটি স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে জিআইএসএস-এর কার্যক্রম সম্ভবত আর অব্যাহত থাকবে না।

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশ একটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ দেশ। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, ঘন ঘন বন্যা, ঘূর্ণিঝড় এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে এখানকার মানুষের জীবনযাত্রা প্রতিনিয়ত হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে।

জিআইএসএস-এর মতো গবেষণা কেন্দ্রগুলি জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবগুলি বুঝতে এবং তাদের মোকাবিলার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

তাই, এই ধরনের গবেষণা কেন্দ্রগুলোর কার্যক্রম ব্যাহত হলে তা বাংলাদেশের জন্য উদ্বেগের কারণ হবে।

নাসা’র বাজেট সংক্রান্ত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা এখন কংগ্রেসের হাতে, যা এই পরিস্থিতিতে অনিশ্চয়তা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *