চাঁদের দৌড়ে কি পিছিয়ে পড়ছে নাসা? মেগ রকেটের উৎক্ষেপণে সবার নজর!

চাঁদে আবারও মানুষ পাঠাতে নাসা’র প্রস্তুতি, কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে স্পেসএক্স।

মহাকাশ গবেষণায় নাসা-র (NASA) পরবর্তী লক্ষ্য হলো চাঁদে নভোচারী পাঠানো। ২০২৭ সালের মধ্যে এই লক্ষ্য পূরণের পরিকল্পনা নিয়ে কাজ চলছে, যার মূল কেন্দ্রবিন্দু হলো স্পেসএক্সের (SpaceX) তৈরি করা বিশাল রকেট ‘স্টারশিপ’ (Starship)।

তবে সবকিছু এত সহজে হচ্ছে না। এই মিশনে সফল হতে নাসা’কে বেশ কিছু কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হচ্ছে। একইসঙ্গে, চীনও (China) ২০৩০ সালের মধ্যে চাঁদে নভোচারী পাঠানোর ঘোষণা দেওয়ায় শুরু হয়েছে এক নতুন ‘চাঁদ-দৌড়’।

নাসা’র পরিকল্পনা অনুযায়ী, ‘আর্টেমিস থ্রি’ (Artemis III) মিশনে চাঁদে মানুষ পাঠানোর জন্য স্টারশিপ-এর সাহায্য নেওয়া হবে। এই মিশনে, প্রথমে একটি স্টারশিপ রকেট উৎক্ষেপণ করা হবে, যা মহাকাশে জ্বালানি ডিপো হিসেবে কাজ করবে।

এরপর, অতিরিক্ত স্টারশিপগুলি উৎক্ষেপণ করে এই ডিপোতে জ্বালানি সরবরাহ করা হবে। এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পরেই মানুষ-সহ স্টারশিপ চাঁদের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবে।

কিন্তু এই পরিকল্পনা বেশ জটিল। স্টারশিপ-এর বিশাল আকারের কারণে এর জন্য প্রচুর জ্বালানির প্রয়োজন। নাসা’র হিসাব অনুযায়ী, একটি চাঁদ-অভিযানের জন্য স্পেসএক্সকে ৪০টির বেশি স্টারশিপ উৎক্ষেপণ করতে হতে পারে, যা অত্যন্ত সময়সাপেক্ষ এবং কঠিন একটি কাজ।

তাছাড়া, মহাকাশে জ্বালানি স্থানান্তরের সময় কিছু জ্বালানি বাষ্পীভূত হয়ে যাওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে।

এই মিশনের জটিলতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অনেকে। প্রাক্তন নাসা প্রশাসক জিম ব্রাইডেনস্টাইন-এর মতে, নাসা’র এই পদ্ধতি সম্ভবত সবচেয়ে উপযুক্ত ছিল না।

কারণ, অ্যাপোলো মিশনের (Apollo missions) তুলনায় বর্তমান পদ্ধতি অনেক বেশি কঠিন।

অন্যদিকে, চীনের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে চাঁদে নভোচারী পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে, নাসা’র জন্য সময়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

তবে, নাসা’র বর্তমান প্রশাসক, শান ডাফি (Sean Duffy) আত্মবিশ্বাসী যে তারা চীনের আগে চাঁদে পৌঁছাতে পারবে।

আমরাই চাঁদে প্রথম যাবো।”

শান ডাফি

স্পেসএক্সের স্টারশিপ এখনো নির্মাণ এবং পরীক্ষার প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। ইতিমধ্যে, এই রকেটের কিছু পরীক্ষামূলক উড্ডয়নেও সমস্যা দেখা গেছে। এই পরিস্থিতিতে, ২০২৭ সালের মধ্যে মিশন সম্পন্ন করা নিয়ে অনেকের মনেই সন্দেহ রয়েছে।

আর্টেমিস প্রোগ্রামের (Artemis program) মূল লক্ষ্য হলো চাঁদের দক্ষিণ মেরু অঞ্চলে অভিযান চালানো, যেখানে বিজ্ঞানীরা বরফের আকারে জল খুঁজে পেয়েছেন।

এই অঞ্চলের কঠিন ভূ-প্রকৃতির কারণে অবতরণ করা কঠিন, তবে এখানে একটি স্থায়ী ঘাঁটি তৈরি করার পরিকল্পনা রয়েছে।

তবে, সমালোচকদের মতে, স্টারশিপের উপর এত বেশি নির্ভর না করে নাসা আরও সহজ এবং কার্যকর একটি পরিকল্পনা করতে পারতো।

নাসা’র এই পরিকল্পনা কতটা সফল হবে, তা সময়ই বলবে। তবে, মহাকাশ গবেষণায় এই নতুন ‘চাঁদ-দৌড়’ আন্তর্জাতিক মহাকাশ অভিযানে যোগ করেছে ভিন্ন মাত্রা।

এই প্রতিযোগিতায় কে জয়ী হয়, সেদিকেই এখন সবার দৃষ্টি।

তথ্য সূত্র: CNN

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *