যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল পার্ক সার্ভিস (NPS) তাদের ওয়েবসাইটে আন্ডারগ্রাউন্ড রেলরোড সম্পর্কিত একটি পাতায় হ্যারিয়েট টাবম্যানের ছবি ও উক্তি সরিয়ে নেওয়ার পর সমালোচনার মুখে তা পুনরায় ফিরিয়ে এনেছে। কর্তৃপক্ষের দাবি, শীর্ষ নেতৃত্বের অনুমোদন ছাড়াই এই পরিবর্তন আনা হয়েছিল।
আন্ডারগ্রাউন্ড রেলরোড ছিল উনিশ শতকে যুক্তরাষ্ট্রে দাসপ্রথা থেকে পালিয়ে আসা আফ্রিকান-আমেরিকানদের একটি গোপন নেটওয়ার্ক। হ্যারিয়েট টাবম্যান ছিলেন এই নেটওয়ার্কের প্রধান ব্যক্তিত্বদের একজন, যিনি ‘কন্ডাক্টর’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন এবং বহু মানুষকে মুক্তির পথে সহায়তা করেছেন।
ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে, এনপিএস-এর ওয়েবসাইটে ‘আন্ডারগ্রাউন্ড রেলরোড কী?’ শীর্ষক পাতায় টাবম্যানের একটি বড় ছবি এবং দাসত্ব থেকে মুক্তি লাভের জন্য তার অভিজ্ঞতা নিয়ে একটি উদ্ধৃতি ছিল। কিন্তু পরে, ওয়েবপেজটি হালনাগাদ করার সময় টাবম্যানের ছবি সরিয়ে সেখানে অন্যান্য কয়েকজন দাসপ্রথা বিরোধী ব্যক্তির ছোট আকারের ছবি যুক্ত করা হয়। এমনকি তার উদ্ধৃতিও বাদ দেওয়া হয়।
এই পরিবর্তনের বিষয়ে প্রথম খবর প্রকাশ করে ‘দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট’। এরপর ইতিহাসবিদ ও শিক্ষাবিদদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। সমালোচকদের মতে, টাবম্যানের অবদানকে ছোট করে দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে এনপিএস মুখপাত্র জানান, কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়াই ওয়েবসাইটে এই পরিবর্তনগুলো আনা হয়েছিল। দ্রুতই ওয়েবপেজটিকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
আন্ডারগ্রাউন্ড রেলরোডে টাবম্যানের অবদান অনস্বীকার্য। তিনি ছিলেন একজন সাহসী নারী, যিনি দাসত্বের শৃঙ্খল থেকে মুক্তির জন্য অসংখ্য মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তার জন্ম হয়েছিল মেরিল্যান্ডে, দাস হিসেবে। পরে তিনি ফিলাডেলফিয়ায় পালিয়ে যান এবং এরপর বহুবার মেরিল্যান্ডে ফিরে এসে অন্যদের মুক্ত করতে সাহায্য করেন।
এনপিএস-এর ওয়েবসাইটে টাবম্যানের প্রতি উৎসর্গীকৃত একটি আলাদা পাতাও রয়েছে। তবে ধারণা করা হচ্ছে, সেটি সম্ভবত অপরিবর্তিত রয়েছে।
এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে, যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন সরকারি ওয়েবসাইটে ডিইআই (বৈচিত্র্য, সাম্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলকতা) কর্মসূচি পরিবর্তনের যে চেষ্টা চলছে, তাও বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
তথ্যসূত্র: সিএনএন