শিরোনাম: পরিবেশ রক্ষার গুরুত্ব: কিভাবে স্বেচ্ছাসেবকতার মাধ্যমে প্রকৃতিকে বাঁচানো যায়
বিশ্বজুড়ে পরিবেশ রক্ষার গুরুত্ব দিন দিন বাড়ছে। উন্নত বিশ্বের দেশগুলোতে, বিশেষ করে আমেরিকাতে, জাতীয় উদ্যানগুলোতে স্বেচ্ছাসেবকতার মাধ্যমে প্রকৃতি সংরক্ষণে উৎসাহিত করা হচ্ছে।
এই ধরনের উদ্যোগগুলি আমাদের দেশের জন্যও শিক্ষণীয় হতে পারে।
আমেরিকার ন্যাশনাল পার্ক সার্ভিস (National Park Service) ২০২৫ সালের জন্য স্বেচ্ছাসেবকদের অংশগ্রহণের সুযোগ ঘোষণা করেছে। এর মাধ্যমে যে কেউ তাদের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য রক্ষার কাজে যুক্ত হতে পারে।
স্বেচ্ছাসেবকরা বিভিন্ন ধরনের কাজে অংশ নেয়, যেমন – পার্ক পরিষ্কার করা, গাছের চারা লাগানো, অথবা দর্শনার্থীদের গাইড করা। এই ধরনের কাজগুলি প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসা বাড়াতে সাহায্য করে।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছর কিছু বিশেষ দিনে স্বেচ্ছাসেবকদের জন্য বিশেষ কর্মসূচি থাকে। উদাহরণস্বরূপ, জুন মাসের প্রথম শনিবার ‘ন্যাশনাল ট্রেইলস ডে’, ১১ই সেপ্টেম্বর ‘৯/১১ ডে অফ রিমেমব্রেন্স এন্ড সার্ভিস’, এবং সেপ্টেম্বরের চতুর্থ শনিবার ‘ন্যাশনাল পাবলিক ল্যান্ডস ডে’ – তে বিশেষ কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়।
তবে, আমাদের দেশের জন্য এই তারিখগুলোর তাৎপর্য হয়তো সরাসরি নেই। বরং, এই দিনগুলোতে স্বেচ্ছাসেবকদের একত্রিত হয়ে কাজ করার যে ধারণা, সেটি গুরুত্বপূর্ণ।
যারা প্রথমবার স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করতে চান, তাদের জন্য ন্যাশনাল পার্ক সার্ভিস ওয়েবসাইটে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে। ওয়েবসাইটে বিভিন্ন রাজ্যের এবং নির্দিষ্ট তারিখ অনুযায়ী স্বেচ্ছাসেবকতার সুযোগগুলো দেখা যায়।
এমনকি, কোনো স্থান উল্লেখ না করেও, আপকামিং সুযোগগুলোও দেখা সম্ভব। উদাহরণস্বরূপ, গোল্ডেন গেট ন্যাশনাল রিক্রিয়েশন এরিয়াতে বুধবার ও বৃহস্পতিবার নিয়মিতভাবে স্বেচ্ছাসেবকতার সুযোগ থাকে।
স্বেচ্ছাসেবকতার সুযোগ পেতে হলে, সাধারণত আগে থেকে নাম নিবন্ধন করতে হয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে, যেমন ইন্ডিয়ানা ডুনস ন্যাশনাল পার্কের ‘ট্র্যাশ ট্রেক’ প্রোগ্রামে সরাসরি যোগদান করা যায়।
তবে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে অনলাইনে অথবা ফোনে আগে থেকে নাম নিবন্ধন করার প্রয়োজন হয়। তাই, স্বেচ্ছাসেবকতার সুযোগ সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য ওয়েবসাইটে দেওয়া নির্দেশিকা ভালোভাবে দেখে নেওয়া উচিত।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল পার্কে স্বেচ্ছাসেবকতার আরও একটি আকর্ষণীয় দিক হলো ‘ভলান্টিয়ার পাস’। এই পাস পেতে হলে ফেডারেল সরকারের তত্ত্বাবধানে থাকা কোনো স্থানে ২৫০ ঘণ্টা স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করতে হয়।
এই পাস থাকলে এক বছর পর্যন্ত আমেরিকার বিভিন্ন জাতীয় উদ্যানে বিনামূল্যে প্রবেশের সুযোগ পাওয়া যায়। এছাড়াও স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করার মাধ্যমে সেখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও জীববৈচিত্র্য সম্পর্কে গভীর ধারণা লাভ করা যায়, যা সাধারণ পর্যটকদের পক্ষে সম্ভব হয় না।
যদিও আমেরিকার জাতীয় উদ্যানে সরাসরি স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করা আমাদের অনেকের জন্য কঠিন হতে পারে, তবে পরিবেশ রক্ষার এই ধারণাটি আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
আমাদের দেশেও বিভিন্ন জাতীয় উদ্যান ও সংরক্ষিত এলাকা রয়েছে, যেমন সুন্দরবন, যেখানে স্থানীয়ভাবে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করার সুযোগ রয়েছে।
আপনি চাইলে বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠন, যেমন – প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) -এর সাথে যুক্ত হতে পারেন। এছাড়া, আপনার এলাকার কোনো বিদ্যালয়ে বা স্থানীয় কোনো উদ্যোগে গাছ লাগানো অথবা পরিবেশ পরিছন্নতার কাজে অংশ নিতে পারেন।
পরিবেশ রক্ষার জন্য স্বেচ্ছাসেবক হওয়া একটি মহৎ কাজ। এটি একদিকে যেমন প্রকৃতির প্রতি আমাদের দায়িত্ব পালন করে, তেমনি আমাদের মানসিক প্রশান্তিও দেয়।
আসুন, আমরা সবাই মিলে আমাদের চারপাশের পরিবেশকে আরও সুন্দর ও বাসযোগ্য করে তুলি।
তথ্য সূত্র: ট্রাভেল অ্যান্ড লেজার