হৃদয় প্রতিস্থাপনের পর: প্রয়াত দাতার পরিবারকে ধন্যবাদ জানালেন সাবেক এনবিএ তারকা

সাবেক এনবিএ (NBA) খেলোয়াড় স্কট পোলার্ড, যিনি হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপনের পর তাঁর জীবন বাঁচানোর জন্য হৃদযন্ত্রের দাতার পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন, তাঁদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।

বাস্কেটবল বিশ্বে পরিচিত এই ক্রীড়াবিদ, যিনি একসময় ‘বোস্টন সেল্টিকস’-এর হয়ে খেলেছেন, সম্প্রতি তাঁর জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এক অভিজ্ঞতার কথা সকলের সাথে ভাগ করে নিয়েছেন।

ফেব্রুয়ারি ২০২৪-এ, পোলার্ড একটি জটিল অস্ত্রোপচারের মধ্যে দিয়ে যান। তাঁর হৃদযন্ত্রে এক বিশেষ ধরনের সমস্যা ছিল, যার কারণে হৃদস্পন্দন স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি হতো।

তাঁর বাবাও একই সমস্যার শিকার হয়ে আগে মারা গিয়েছিলেন। তাই, জীবন বাঁচাতে তাঁর হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপন করা অত্যন্ত জরুরি ছিল।

অস্ত্রোপচারের পর সুস্থ হয়ে তিনি তাঁর হৃদযন্ত্রের দাতার পরিবারের সাথে দেখা করার সিদ্ধান্ত নেন।

সাধারণত, অঙ্গদানের ক্ষেত্রে দাতার পরিবার এবং গ্রহীতার পরিচয় গোপন রাখা হয়।

তবে, পোলার্ড তাঁর কৃতজ্ঞতা জানাতে চেয়েছিলেন। তিনি একটি আবেগপূর্ণ চিঠি লেখেন, যেখানে তিনি তাঁর জীবন বাঁচানোর জন্য দাতার পরিবারের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

চিঠিতে তিনি লেখেন, “আমি এবং আমার পরিবার, বন্ধু-বান্ধব—আমরা সবাই আপনার প্রিয়জনের এই মহান ত্যাগের জন্য চির কৃতজ্ঞ।” তিনি জানান, তিনি ব্যক্তিগতভাবে তাঁদের সাথে দেখা করতে চান এবং তাঁদের প্রতি তাঁর কৃতজ্ঞতা জানাতে চান।

চিঠির উত্তরে পোলার্ড জানতে পারেন, তাঁর হৃদযন্ত্রের দাতার নাম ছিল কেসি অ্যাঞ্জেল। কেসির স্ত্রী পামেলা জানান, “আমরা খুবই আনন্দিত যে, তাঁর (কেসির) হৃদযন্ত্রটি ভালোবাসায় পরিপূর্ণ থাকবে এবং অন্যদের ভালোবাসতে সাহায্য করবে।

পোলার্ড এবং পামেলা নভেম্বর ২০২৪-এ ফোনে কথা বলেন এবং পরে দেখা করার সিদ্ধান্ত নেন।

অবশেষে, মার্চ মাসের ১৭ তারিখে, অস্ত্রোপচারের এক বছর পর, পোলার্ড কেসির স্ত্রী পামেলা, তাঁদের ১২ বছর বয়সী ছেলে উইলিয়াম এবং কেসির বোন মেগানের সাথে সাক্ষাৎ করেন।

এই সাক্ষাতে এক আবেগঘন পরিবেশ তৈরি হয়।

উইলিয়াম তাঁর বাবার গল্প বলেন, যা শুনে পোলার্ডের চোখে জল এসে যায়।

পোলার্ড বলেন, “আমি একজন সন্তানের বাবাকে হারানোর কষ্ট বুঝি। সেই অনুভূতি আমার আছে।” এরপর, তাঁরা সবাই মিলে স্টেথোস্কোপ দিয়ে পোলার্ডের বুকে কেসির হৃদস্পন্দন শোনেন।

মেগান জানান, এই সাক্ষাৎ তাঁদের জন্য ছিল শোক থেকে সেরে ওঠার এক অসাধারণ মুহূর্ত।

পোলার্ড বর্তমানে একটি ভালো জীবন যাপন করার চেষ্টা করছেন এবং অঙ্গদানের বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য কাজ করছেন।

তিনি মনে করেন, কেসি অ্যাঞ্জেল তাঁর কাছে একজন ‘হিরো’, যিনি তাঁর জীবন বাঁচিয়েছেন।

সম্প্রতি, ইএসপিএন (ESPN)-এ পোলার্ডের স্বাস্থ্য বিষয়ক লড়াই এবং প্রতিস্থাপন প্রক্রিয়া নিয়ে একটি তথ্যচিত্র প্রকাশিত হয়েছে, যার নাম ‘হার্ট অফ পার্ল’।

তথ্য সূত্র: পিপল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *