শিরোনাম: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন আতঙ্ক: নেব্রাস্কায় অভিবাসীদের উপর আইস-এর (ICE) ধরপাকড় ও নতুন ডিটেনশন সেন্টার।
যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন নিয়ে বিতর্ক যখন তুঙ্গে, ঠিক তখনই নেব্রাস্কা অঙ্গরাজ্যে অভিবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক বাড়ছে। সম্প্রতি এখানে আইস (Immigration and Customs Enforcement) কর্মকর্তাদের ধরপাকড় অভিযান এবং একটি নতুন ডিটেনশন সেন্টার খোলার সিদ্ধান্তের কারণে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
“কর্নহাস্কার ক্লিংক” নামে পরিচিত এই ডিটেনশন সেন্টারটি মূলত অভিবাসীদের আটকের জন্য তৈরি করা হয়েছে, যা অনেকের মনে ভীতি সঞ্চার করেছে।
আলেজান্দ্রা নামের একজন অভিবাসী নারী, যিনি দীর্ঘদিন ধরে নেব্রাস্কায় বসবাস করছেন, তার জীবন এখন চরম উদ্বেগের মধ্যে কাটছে। তিনি জানান, তার চারটি সন্তান জন্মসূত্রে মার্কিন নাগরিক হলেও, নিজের অভিবাসন সংক্রান্ত জটিলতার কারণে তিনি সব সময় আতঙ্কে থাকেন।
সন্তানদের থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার আশঙ্কায় তিনি ঘর থেকে বের হতেও ভয় পান।
এই পরিস্থিতিতে নেব্রাস্কার গভর্নর, জিম পিলেন, কেন্দ্রীয় অভিবাসন নীতির প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। তার সরকার আইস-এর সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে, যার মাধ্যমে বছরে প্রায় ১ কোটি ৪০ লক্ষ মার্কিন ডলার আয়ের সম্ভাবনা রয়েছে।
তবে, মানবাধিকার সংস্থা এবং স্থানীয় নেতাদের মতে, এই পদক্ষেপ অভিবাসী শ্রমিকদের মধ্যে ভীতি আরও বাড়িয়ে তুলবে।
নেব্রাস্কায় অভিবাসী শ্রমিকদের একটি বড় অংশ মূলত মাংস প্রক্রিয়াকরণ শিল্পে কাজ করেন। এই শিল্পটি রাজ্যের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
কিন্তু আইস-এর ধরপাকড়ের কারণে অনেক শ্রমিক কাজে যেতে ভয় পাচ্ছেন। এর ফলে, এই শিল্পে কর্মী সংকট দেখা দিয়েছে। নেব্রাস্কা ফার্মার্স ইউনিয়নের প্রধান জন হ্যানসেন জানান, শ্রমিকদের মধ্যে ভীতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে তারা প্রকাশ্যে আসতেও ভয় পাচ্ছেন।
এই পরিস্থিতিতে অনেকে মনে করছেন, প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসন বিরোধী নীতি এবং গণহারে বিতাড়নের হুমকির কারণে শ্রমিকদের মধ্যে এই ধরনের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। যদিও অভিবাসীরা যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমবাজারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছেন।
তারা বিভিন্ন ধরনের কাজ করে অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখতে সহায়তা করেন।
অন্যদিকে, “কর্নহাস্কার ক্লিংক”-এর মতো ডিটেনশন সেন্টারগুলো খোলার ফলে অভিবাসীদের আইনি অধিকার লঙ্ঘিত হওয়ার সম্ভাবনাও বাড়ছে বলে অনেকে মনে করেন।
এই সেন্টারগুলোর দূরবর্তী অবস্থান পরিবার ও আইনজীবীদের জন্য তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা কঠিন করে তুলবে।
আলেজান্দ্রার মতো অনেক অভিবাসী পরিবার এখন অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। তারা হয়তো নেব্রাস্কা ছেড়ে যাওয়ার কথা ভাবছেন, যেখানে তারা কয়েক দশক ধরে বসবাস করেছেন।
তাদের আশঙ্কা, অভিবাসন বিরোধী নীতির কারণে তাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎও হুমকির মুখে পড়তে পারে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন