ভারতীয় ক্রীড়াঙ্গনের উজ্জ্বল নক্ষত্র নীরজ চোপড়া, যিনি জ্যাভলিন থ্রোয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ও অলিম্পিক পদকজয়ী, আসন্ন ২০২৫ মৌসুমের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কাতারের দোহায় অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ডায়মন্ড লীগ দিয়ে তিনি নতুন যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছেন।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে নিজের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা, মানসিক চাপ, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রভাব এবং ৯০ মিটার দূরত্ব অতিক্রম করার লক্ষ্যের কথা জানিয়েছেন এই তারকা।
ভারতে একজন জনপ্রিয় ক্রীড়াবিদ হওয়াটা বেশ চ্যালেঞ্জিং। নীরজ চোপড়া জানান, দেশের হয়ে পদক জেতাটা তার কাছে গর্বের এবং এটি কিছুটা হলেও চাপ কমাতে সাহায্য করে।
মাঠের চ্যালেঞ্জগুলো তিনি মনোযোগের সঙ্গে মোকাবেলা করেন। সাধারণত তিনি ভারতের বাইরে প্রশিক্ষণ করেন, কখনো দক্ষিণ আফ্রিকায়, আবার প্রতিযোগিতার সময় ইউরোপে।
দেশে ফিরলে জনসাধারণের প্রত্যাশা পূরণ করতে হয়, যা অনেক সময় উপভোগ্য হয় না। তবে সময়ের সাথে সাথে অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের পরামর্শে তিনি এই চাপ মোকাবেলা করতে শিখেছেন।
সোশ্যাল মিডিয়া প্রসঙ্গে নীরজ বলেন, বর্তমানে যে কেউ, যার কাছে ইন্টারনেট সংযোগ আছে, তিনি নিজের মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা পান। অনেক সময় মানুষ ব্যক্তিগত হতাশা থেকে মুক্তি পেতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে।
তবে তিনি এসব মন্তব্যকে গুরুত্ব দেন না, বরং নিজের কাজের দিকে মনোনিবেশ করেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে দূরে থাকার সম্ভাবনা নিয়ে জানতে চাইলে তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে জানান, প্রয়োজন হলে তিনি এক মুহূর্তেই এটি ত্যাগ করতে পারেন।
নীরজের মতে, তিনি একজন অ্যাথলেট, কোনো ইনফ্লুয়েন্সার নন। জ্যাভলিন তার পেশা, সোশ্যাল মিডিয়া নয়।
ভারতীয় এই অ্যাথলিট মনে করেন, জ্যাভলিনের মতো খেলা ধীরে ধীরে বিশ্বব্যাপী পরিচিতি লাভ করছে। সম্প্রতি, দোহা ডায়মন্ড লীগে চারজন ভারতীয় অ্যাথলেটের অংশগ্রহণ একটি ইতিবাচক দিক।
নীরজের নিজের ইভেন্ট ‘নীরজ চোপড়া ক্লাসিক’ এই খেলাকে আরও জনপ্রিয় করতে সহায়তা করবে বলে তিনি মনে করেন। তিনি চান, এই ইভেন্টটি ভারতীয় দর্শকদের কাছে খেলাটিকে তুলে ধরুক এবং এর প্রসারে সাহায্য করুক।
নতুন মৌসুম নিয়ে কথা বলতে গিয়ে নীরজ বলেন, তিনি প্রস্তুত এবং মুখিয়ে আছেন। তার নতুন কোচ, অলিম্পিক স্বর্ণপদক জয়ী জন জেজনি, তাকে নতুন রুটিনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে সাহায্য করেছেন।
তিনি এখন শারীরিক দিক থেকেও ভালো অবস্থায় আছেন। ৯০ মিটারের বাধা অতিক্রম করার বিষয়ে তিনি বলেন, তিনি আত্মবিশ্বাসী এবং ভালো ফর্মে আছেন।
জেজনির পরামর্শ তাকে মানসিক চাপ মোকাবেলা করতে সাহায্য করে।
খেলাধুলার উন্নতির পাশাপাশি, নীরজ চোপড়া চান তরুণ প্রজন্মের কাছে নিজেকে একজন অনুপ্রেরণা হিসেবে তুলে ধরতে। দক্ষিণ এশিয়ায় খেলাধুলার প্রসারে তিনি আরও বেশি অবদান রাখতে আগ্রহী।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা