নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হলো বার্ষিক প্রাইড র্যালি। এবারের র্যালিটি ছিল বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকার সহায়তা বন্ধ করার পর এই প্রথম এমন একটি আয়োজন করা হলো।
জানা গেছে, এই পদক্ষেপের ফলে দেশটির বহু সাহায্য কেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেছে, যার সরাসরি প্রভাব পড়েছে সেখানকার সমকামী, উভকামী এবং রূপান্তরকামীদের (এলজিবিটিকিউ+) ওপর।
ঐতিহ্যগতভাবে, কাঠমান্ডুর এই প্রাইড র্যালিটি ‘গাই যাত্রা’ উৎসবের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে অনুষ্ঠিত হয়। এই উৎসবে মৃত স্বজনদের স্মরণে নানা ধরনের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা ও শোভাযাত্রা হয়ে থাকে, যেখানে এলজিবিটিকিউ+ সম্প্রদায়ের সদস্যরাও নিয়মিত অংশ নেন।
কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়ন বন্ধ হয়ে যাওয়ায়, এবার র্যালির আয়োজন কিছুটা চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়।
আগে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকার, বিশেষ করে ইউএস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ইউএসএআইডি)-এর মাধ্যমে এলজিবিটিকিউ+ অধিকার বিষয়ক বিভিন্ন প্রকল্পে অর্থ সহায়তা দিতো। এই সহায়তা আসতো এইচআইভি প্রতিরোধ, নিরাপদ যৌনতা বিষয়ক পরামর্শ এবং স্বাস্থ্যসেবার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে।
কিন্তু সেই সহায়তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এলজিবিটিকিউ+ সম্প্রদায়ের জন্য সাহায্য কেন্দ্রগুলো বন্ধ হতে শুরু করে। এর ফলে, হাজার হাজার মানুষ সহায়তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
এই পরিস্থিতিতেও, এলজিবিটিকিউ+ অধিকারকর্মীরা তাঁদের লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। র্যালিতে অংশগ্রহণকারী সিমরান শেরচান জানান, “অর্থ সহায়তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমাদের দেওয়া অনেক পরিষেবা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তবে আমরা হতাশ নই।
আমরা বিকল্প উৎস থেকে অর্থ সংগ্রহের চেষ্টা করছি, যাতে এই পরিষেবাগুলো পুনরায় চালু করা যায়।”
উল্লেখ্য, কয়েক বছর আগেও নেপালে এলজিবিটিকিউ+ সম্প্রদায়ের অধিকার সুরক্ষায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। নেপাল ছিল এশিয়ার প্রথম দেশগুলোর মধ্যে একটি, যারা সমলিঙ্গের বিয়েকে স্বীকৃতি দিয়েছে।
২০১৫ সালে গৃহীত সংবিধানেও যৌন অভিমুখিতার ভিত্তিতে কোনো বৈষম্য করা যাবে না বলে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
বর্তমানে সহায়তা কমে যাওয়ায় অনেক সমস্যা সৃষ্টি হলেও, নেপালের এলজিবিটিকিউ+ সম্প্রদায় তাঁদের অধিকার আদায়ের লড়াই চালিয়ে যেতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস