গাজায় ত্রাণ বন্ধের সিদ্ধান্ত: নেতানিয়াহুর নমনীয়তা?

গাজা উপত্যকায় মানবিক সহায়তা পুনরায় চালুর সিদ্ধান্ত নিতে মিত্রদের চাপের কথা স্বীকার করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। সোমবার এক ভিডিও বার্তায় তিনি জানান, আন্তর্জাতিক মিত্ররা গাজায় ‘ক্ষুধার ছবি’ দেখে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং সহায়তা পুনরায় চালু না করলে তারা ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখতে পারবে না বলে জানিয়েছিল।

মার্চের শুরু থেকে গাজায় সব ধরনের সহায়তা বন্ধ করে দিয়েছিল ইসরায়েল। এর কারণ হিসেবে তারা হামাসকে চাপ প্রয়োগের কথা উল্লেখ করেছিল। খাদ্য, জ্বালানি ও ঔষধসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রীর প্রবেশাধিকার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।

নেতানিয়াহু বলেছেন, পুনরায় চালু করা সহায়তা ‘সামান্য’ হবে, তবে ঠিক কবে নাগাদ তা শুরু হবে সে বিষয়ে তিনি কোনো সুনির্দিষ্ট সময় উল্লেখ করেননি। ইসরায়েলের এই সিদ্ধান্তের ফলে অবরুদ্ধ গাজায় মানবিক সংকট কিছুটা লাঘব হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

গাজা ভূমধ্যসাগরের তীরে অবস্থিত একটি ছোট উপত্যকা, যা দীর্ঘদিন ধরে ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনিদের মধ্যে সংঘাতের কেন্দ্রবিন্দু। এখানকার অধিবাসীদের জীবনযাত্রা বিভিন্ন সময়ে ইসরায়েলি অবরোধের কারণে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জাতিসংঘের মতে, গাজার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ বর্তমানে মানবিক সহায়তার ওপর নির্ভরশীল।

আন্তর্জাতিক মহলের উদ্বেগের কারণ হলো, গাজায় মানবিক সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। খাদ্য ও প্রয়োজনীয় ঔষধের অভাবে সেখানকার মানুষের জীবনযাত্রা আরও কঠিন হয়ে পড়েছে। মিত্র দেশগুলোর চাপ ছিল, সহায়তা পুনরায় চালু না করলে তারা ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন পুনর্বিবেচনা করতে পারে।

বিশ্লেষকদের মতে, নেতানিয়াহুর এই সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক চাপ এবং গাজার জনগণের মানবিক বিপর্যয়ের কারণে নিতে বাধ্য হয়েছেন। তবে, সরবরাহকৃত সহায়তার পরিমাণ খুবই সামান্য হওয়ায় সেখানকার মানুষের দুর্ভোগ কতটা কমবে তা নিয়ে এখনো সংশয় রয়েছে। ভবিষ্যতে এই সহায়তা কার্যক্রম কিভাবে পরিচালিত হবে এবং গাজার মানুষের জীবনে এর প্রভাব কী হবে, এখন সেটাই দেখার বিষয়।

তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *