আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)-এর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা সত্ত্বেও হাঙ্গেরি সফরে যাচ্ছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
গাজায় যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে এই পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। তবে হাঙ্গেরি সরকার স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, তারা আন্তর্জাতিক আদালতের এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করবে না।
বুদাপেস্টে বুধবার সন্ধ্যায় হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবানের সঙ্গে নেতানিয়াহুর সাক্ষাত হওয়ার কথা রয়েছে। তাদের বৈঠকের আলোচ্যসূচি এখনো সীমিত রাখা হয়েছে, যেখানে হলোকস্ট স্মৃতিসৌধ পরিদর্শনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
গত নভেম্বরে আইসিসি নেতানিয়াহু এবং প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। এরপর এটি নেতানিয়াহুর দ্বিতীয় বিদেশ সফর।
এর আগে তিনি গত ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে ওয়াশিংটন গিয়েছিলেন। উল্লেখ্য, ইসরায়েল এবং যুক্তরাষ্ট্র উভয় দেশই আইসিসির সদস্য নয়।
নেতানিয়াহুকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে হাঙ্গেরির এই সিদ্ধান্তকে ইতিমধ্যে সমালোচনা করেছে হেগভিত্তিক আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত।
আদালতের মুখপাত্র ফাদি এল-আব্দুল্লাহ বলেছেন, আইসিসির সিদ্ধান্তকে একতরফাভাবে মূল্যায়ন করার অধিকার কোনো সদস্য রাষ্ট্রের নেই।
তিনি আরও বলেন, আইসিসির সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে অংশগ্রহণকারী দেশগুলো বাধ্য এবং আদালতের সিদ্ধান্তের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করলে তারা আদালতের সঙ্গে আলোচনা করতে পারে।
ইউরোপীয় গ্রিন পার্টির পক্ষ থেকে নেতানিয়াহুকে গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানানো হয়েছে।
দলটির কো-চেয়ার সিয়ারান কাফে এক বিবৃতিতে বলেছেন, আন্তর্জাতিক আইন সমুন্নত রাখা এবং যুদ্ধাপরাধ ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জাতীয় সরকারগুলোর কর্তব্য।
তিনি আরও যোগ করেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা উপেক্ষা করার মাধ্যমে ভিক্টর অরবানের সরকার আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আইনের শাসনের প্রতি একই ধরনের অবজ্ঞা দেখাচ্ছে, যা তিনি হাঙ্গেরিতেও করে থাকেন।
আইসিসি জানিয়েছে, তাদের মূল্যায়নে নেতানিয়াহু এবং গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গাজার বেসামরিক নাগরিকদের খাদ্য, জল, ওষুধ ও জ্বালানি সরবরাহ থেকে ইচ্ছাকৃতভাবে বঞ্চিত করার ‘যুক্তিযুক্ত কারণ’ রয়েছে।
যদিও ইসরায়েল এই অভিযোগ অস্বীকার করে এটিকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং ইহুদি বিদ্বেষের ফল হিসেবে বর্ণনা করেছে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা