যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত নেতানিয়াহু, হাঙ্গেরিতে ওর্বানের আশ্রয়!

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু’র হাঙ্গেরি সফর নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করলেও হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অর্বান ঘোষণা করেছেন, তিনি এই পরোয়ানা মানবেন না।

আগামী বৃহস্পতিবার থেকে নেতানিয়াহু’র চার দিনের হাঙ্গেরি সফর শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।

গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের প্রেক্ষাপটে নেতানিয়াহু’র বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ এনে গত নভেম্বরে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আইসিসি। এর প্রতিক্রিয়ায় হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী অর্বান তাৎক্ষণিকভাবে জানান, তাঁর দেশ আইসিসির সিদ্ধান্তকে “গণ্য করবে না”।

এমনকি হাঙ্গেরি সম্ভবত আইসিসি থেকে বেরিয়ে আসার কথা বিবেচনা করছে বলেও জানা গেছে।

নেতানিয়াহুর এই সফর এমন এক সময়ে হচ্ছে, যখন ইসরায়েল গাজা উপত্যকা দখলের প্রক্রিয়া চালাচ্ছে এবং ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডকে বিভক্ত করার পরিকল্পনা করছে। গাজায় ইসরায়েলের সামরিক হামলায় এরই মধ্যে ৫০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক।

হামাসের হামলায় নিহত হয়েছিল ১,২০০ জন ইসরায়েলি।

আইসিসির সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে হাঙ্গেরির ওপর এই পরোয়ানা কার্যকর করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু অর্বানের সরকার আইসিসির সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

মানবাধিকার সংস্থাগুলো হাঙ্গেরির এই পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এক বিবৃতিতে বলেছে, “নেতানিয়াহু একজন যুদ্ধাপরাধী, যিনি যুদ্ধকে একটি কৌশল হিসেবে ব্যবহার করেছেন এবং ইচ্ছাকৃতভাবে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলা চালিয়েছেন।”

হিউম্যান রাইটস ওয়াচও হাঙ্গেরির এই পদক্ষেপকে আইনের শাসনের প্রতি চরম অবজ্ঞা হিসেবে উল্লেখ করেছে।

অন্যদিকে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে এই ইস্যুতে বিভেদ দেখা দিয়েছে। স্পেন, নেদারল্যান্ডস এবং ফিনল্যান্ডসহ কিছু দেশ আইসিসির পরোয়ানা মেনে চলার কথা জানালেও, পোল্যান্ড এবং জার্মানির মতো দেশগুলো ভিন্ন অবস্থান নিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র, যা আইসিসির সদস্য নয়, নেতানিয়াহুকে সমর্থন করে আসছে। এর আগে, যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আইসিসির তদন্তের বিরোধিতা করে আদালতের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের চেষ্টা করেছে।

আইসিসি এক বিবৃতিতে বলেছে, সদস্য রাষ্ট্রগুলোর গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকর করার আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে এবং এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার একচ্ছত্র অধিকার আদালতের।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *