ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু দেশটির অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থা, শিন বেটের নতুন প্রধান হিসেবে ভাইস অ্যাডমিরাল এলি শারভিটের নাম ঘোষণা করেছেন। যদিও দেশটির সুপ্রিম কোর্ট বর্তমান প্রধান রোনেন বারকে বরখাস্ত করার ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছে।
নেতানিয়াহুর এই পদক্ষেপ বর্তমানে ইসরায়েলের রাজনৈতিক অঙ্গনে বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জানানো হয়, শারভিটকে শিন বেটের প্রধান হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে। শিন বেট হলো ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থা, যা দেশের অভ্যন্তরে এবং বাইরের বিভিন্ন হুমকি, বিশেষ করে ফিলিস্তিন ও লেবাননে অবস্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর কার্যকলাপের ওপর নজরদারি করে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, সাতজন যোগ্য প্রার্থীর মধ্য থেকে গভীর আলোচনার মাধ্যমে শারভিটকে বেছে নেওয়া হয়েছে। নেতানিয়াহু বলেন, শারভিট দীর্ঘদিন ধরে সামরিক বাহিনীতে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং তাঁর অভিজ্ঞতা রয়েছে।
ভাইস অ্যাডমিরাল শারভিট দীর্ঘ ৩৬ বছর ধরে সামরিক বাহিনীতে ছিলেন। তিনি হামাস, হিজবুল্লাহ এবং ইরানের বিরুদ্ধে জটিল অভিযান পরিচালনা করেছেন।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে হামাসের চালানো হামলায় ১,১৩৯ জন নিহত হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু শিন বেটের বর্তমান প্রধান রোনেন বারকে বরখাস্ত করতে চেয়েছিলেন। নেতানিয়াহু অভিযোগ করেন, ওই হামলার পর তিনি বারকে আর বিশ্বাস করতে পারছেন না।
তবে বার এই ব্যর্থতার জন্য সরকারের দিকেই আঙুল তুলেছেন।
প্রধানমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। সরকারে বিভেদ দেখা দিয়েছে এবং ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। সমালোচকরা বলছেন, এই সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তাঁদের মতে, শিন বেট প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি তদন্ত করছিল, তাই এই বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিষয়টি আদালতে গড়ালে সুপ্রিম কোর্ট বারকে বরখাস্তের প্রক্রিয়া স্থগিত করে দেয়। যদিও নতুন প্রধান নিয়োগের প্রক্রিয়াটি চালু রাখার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
তবে নেতানিয়াহুর এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করেছেন ন্যাশনাল ইউনিটি পার্টির নেতা বেনি গান্টজ। তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্ত বিচার বিভাগের বিরুদ্ধে একটি অভিযান এবং এর মাধ্যমে তিনি ইসরায়েলকে একটি ভয়াবহ সাংবিধানিক সংকটের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন।” ডেমোক্রেটস পার্টির প্রধান ইয়াইর গোলানও মনে করেন, প্রধানমন্ত্রী আইনের শাসনের ওপর আঘাত হেনেছেন।
তাঁর মতে, “গণতান্ত্রিক ইসরায়েল তাঁর জন্য একটি বিরাট চ্যালেঞ্জ।”
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা