মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ঔষধ প্রশাসন (FDA) সম্প্রতি একটি নতুন ধরণের অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ অনুমোদন করেছে, যা মূত্রনালীর সংক্রমণ (ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন বা ইউটিআই) এর চিকিৎসায় ব্যবহৃত হবে। এই ঔষধটির নাম হলো ‘ব্লুজেপা’ (Blujepa)।
এটি গেপোটাইডাসিন (gepotidacin) নামক একটি নতুন অ্যান্টিবায়োটিকের ব্র্যান্ড নাম। বিশেষ করে ১২ বছর বা তার বেশি বয়সী মেয়েদের যাদের জটিলতামুক্ত ইউটিআই হয়েছে, তাদের চিকিৎসার জন্য এটি তৈরি করা হয়েছে।
আশা করা হচ্ছে, ২০২৫ সালের দ্বিতীয়ার্ধে এই ওষুধটি বাজারে পাওয়া যাবে।
ইউটিআই নারীদের মধ্যে একটি সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা। প্রায় অর্ধেক মহিলার জীবনে কোনো না কোনো সময়ে ইউটিআই হতে পারে।
উদ্বেগের বিষয় হলো, একবার চিকিৎসা করার পরেও প্রায় ৩০ শতাংশ ক্ষেত্রে এই সংক্রমণ আবার ফিরে আসে। এই কারণে, নতুন অ্যান্টিবায়োটিকের আগমন নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ।
কারণ বিদ্যমান অ্যান্টিবায়োটিকগুলোর বিরুদ্ধে ব্যাকটেরিয়ার প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ছে। ব্লুজেপা হলো গত ২০ বছরের মধ্যে ইউটিআই-এর চিকিৎসায় অনুমোদিত হওয়া প্রথম নতুন ধরণের অ্যান্টিবায়োটিক।
এর আবিষ্কারে মার্কিন সরকারের বায়োমেডিক্যাল অ্যাডভান্সড রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অথরিটি এবং ডিফেন্স থ্রেট রিডাকশন এজেন্সি অর্থায়ন করেছে।
চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্লুজেপা-এর অনুমোদন একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। কারণ এটি অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহায়ক হবে।
ব্লুজেপা ব্যাকটেরিয়ার দুটি এনজাইমের কাজে বাধা দেয়, যা তাদের বিভাজনে প্রয়োজন হয়। এই পদ্ধতির কারণে, এটি ব্যাকটেরিয়ার অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধের সম্ভাবনা কমাতে পারে।
ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে দেখা গেছে, এই ওষুধটি দৈনিক দুবার সেবনের মাধ্যমে প্রচলিত অ্যান্টিবায়োটিক, যেমন – নাইট্রোফুরানটোইন (nitrofurantoin) -এর মতোই কার্যকর ফল দিয়েছে।
ট্রায়ালে অংশগ্রহণকারী রোগীদের মধ্যে প্রায় ১৬ শতাংশের ডায়রিয়া এবং ৯ শতাংশের বমিভাব দেখা গেছে, তবে এগুলো সাধারণত মৃদু ছিল।
ইউটিআই-এর উপসর্গগুলির মধ্যে রয়েছে – ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া, প্রস্রাবের সময় ব্যথা বা জ্বালাপোড়া, প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত পড়া, তলপেটে সামান্য ক্র্যাম্প এবং প্রস্রাব করার পরেও আবারও তা করার অনুভূতি হওয়া।
যদিও এই মুহূর্তে ব্লুজেপা শুধুমাত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবহারের জন্য অনুমোদিত হয়েছে, তবে এটি বিশ্বজুড়ে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে।
বাংলাদেশের মতো দেশে, যেখানে এই ধরনের সংক্রমণের হার বেশি, সেখানেও নতুন চিকিৎসার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। তবে, বাংলাদেশে এই ওষুধটি কবে নাগাদ পাওয়া যাবে, সে বিষয়ে এখনো কোনো নিশ্চিত খবর পাওয়া যায়নি।
তথ্য সূত্র: CNN