ভারতে বাড়ছে নতুন কোভিড! বিশেষজ্ঞরা যা বলছেন, শুনলে চমকে যাবেন!

বিশ্বজুড়ে নতুন করে করোনাভাইরাসের একটি প্রজাতি দ্রুত ছড়াচ্ছে, যা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এনবি.১.৮.১ নামক এই নতুন প্রজাতি, যা ‘নিম্বাস’ নামেও পরিচিত, ইতোমধ্যে চীনসহ বিভিন্ন দেশে শনাক্ত হয়েছে এবং ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রেও এর বিস্তার ঘটার আশঙ্কা করা হচ্ছে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের মানুষের জানা দরকার এর বিস্তার, উপসর্গ এবং প্রতিরোধের উপায় সম্পর্কে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিম্বাস ওমিক্রন ধরনের একটি উপ-প্রজাতি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এটিকে ‘পর্যবেক্ষণে থাকা প্রজাতি’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। যদিও এখনও পর্যন্ত এই প্রজাতি আগের প্রজাতিগুলোর তুলনায় বেশি গুরুতর অসুস্থতা তৈরি করছে এমন প্রমাণ পাওয়া যায়নি, তবে এর দ্রুত বিস্তার ক্ষমতা বেশি হতে পারে।

এর মূল কারণ হল, ভাইরাসটি ক্রমাগত পরিবর্তিত হচ্ছে এবং নতুন রূপ নিচ্ছে। সংক্রমণের সুযোগ যত বাড়বে, ততই এটি নতুন রূপ নিতে পারবে।

এই নতুন প্রজাতির সংক্রমণ হলে সাধারণ ফ্লু-এর মত উপসর্গ দেখা দিতে পারে। যেমন – নাক দিয়ে জল পড়া, গলা ব্যথা, জ্বর, ক্লান্তি, মাথা ও শরীরে ব্যথা ইত্যাদি। কিছু ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্ট, বমি বা ডায়রিয়ার মতো সমস্যাও হতে পারে।

যদিও বেশিরভাগ মানুষ সুস্থ হয়ে উঠবেন, তবে বয়স্ক এবং অন্য রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন হতে পারে।

বর্তমানে উপলব্ধ কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনগুলো এই নতুন প্রজাতির বিরুদ্ধে কতটা কার্যকর, তা এখনো নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, পরীক্ষাগারে কিছু ডেটা পাওয়া গেছে যা ইঙ্গিত করে যে, ভ্যাকসিনের মাধ্যমে তৈরি হওয়া রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে এড়াতে সক্ষম এই নতুন প্রজাতি।

তাই, এটি ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা কিছুটা কমাতে পারে। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যেতে পারে।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যেহেতু এই প্রজাতি দ্রুত ছড়াচ্ছে, তাই এটি প্রতিরোধের জন্য আগের মতোই সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। জনসমাগমপূর্ণ স্থানগুলোতে, বিশেষ করে যেখানে বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা কম, সেখানে মাস্ক পরা উচিত।

বয়স্ক ব্যক্তি এবং যাদের অন্য শারীরিক সমস্যা রয়েছে, তাদের অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করা দরকার।

বাংলাদেশে এখনো পর্যন্ত এই নতুন প্রজাতির সংক্রমণ সম্পর্কে সরকারিভাবে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে স্বাস্থ্য বিভাগ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রস্তুত রয়েছে।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পরিস্থিতিতে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন থাকতে হবে। নিয়মিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, বিশেষ করে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া এবং অসুস্থ বোধ করলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

এছাড়া, সরকার ও স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশনাগুলো মেনে চলতে হবে।

ভ্যাকসিন নেওয়া এখনো গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে বয়স্ক এবং ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের বুস্টার ডোজ নেওয়া উচিত। নতুন ভ্যাকসিন বাজারে আসার পরে সেটি গ্রহণ করা যেতে পারে।

কোভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে সবাইকে সচেতন হতে হবে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।

তথ্যসূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *