নবজাতকের আগমনের পর শ্বশুরবাড়ির লোকজনের অতিরিক্ত হস্তক্ষেপে অতিষ্ঠ এক তরুণী মা। সম্প্রতি, একুশ বছর বয়সী ওই মা তার অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন, যেখানে তিনি বলেছেন, সন্তান জন্মগ্রহণের পর থেকেই তার ব্যক্তিগত পরিসর যেন “থেঁতলে দেওয়া” হচ্ছে।
আলোচিত ঘটনাটি ঘটেছে, যেখানে ওই তরুণী জানান, সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার আট দিনের মধ্যে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাদের বাড়িতে এসে হাজির হন। মা হওয়ার এই কঠিন সময়ে একদিকে যেমন শারীরিক দুর্বলতা, তেমনই মানসিক অস্থিরতা গ্রাস করেছে তাকে।
এমন পরিস্থিতিতে শাশুড়ি এসে বিনা আমন্ত্রণেই তাদের বাড়িতে থাকতে শুরু করেন। ওই তরুণীর ভাষ্যমতে, সন্তান জন্ম নেওয়ার সময় তিনি এবং তার স্বামী দুজনেই চেয়েছিলেন, হাসপাতালে যেন কোনো আত্মীয়-স্বজন না আসেন।
কারণ, তারা দুজনেই চেয়েছিলেন, মা ও শিশু দুজনেই যেন পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে পারে। কিন্তু তাদের সেই ইচ্ছাকে সম্মান জানানো হয়নি। এমনকি, তারা সন্তানের নামকরণের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরেও, শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাতে অসন্তুষ্ট হন।
ঘটনা এখানেই শেষ নয়। এর কয়েক দিন পর, ওই তরুণীর ননদও তাদের বাড়িতে আসেন। তিনি নাকি তরুণীকে বলেন, তিনি (তরুণী) তাকে স্বাগত জানাতে বাইরে না আসায় তিনি “হৃদয় ভেঙে গেছে” অনুভব করেছেন।
শুধু তাই নয়, ননদ আরও বলেন, শাশুড়িকে যেন ভালোভাবে দেখাশোনা করা হয়, কারণ “আগেও” নাকি তিনি (তরুণী) তা করেননি।
এরপর, শাশুড়ি আরও দুই দেবর ও তাদের স্ত্রীদের নিয়ে হাজির হন। তরুণীর ভাষায়, এতজন মানুষের উপস্থিতি তার জন্য “শারীরিকভাবে এবং মানসিকভাবে” অসহনীয় হয়ে ওঠে।
তিনি জানান, তিনি চাননি কেউ তার শিশুকে চুমু খাক, কিন্তু শাশুড়ি সে কথা শোনেননি। এমনকি, দেবরের স্ত্রীরাও নাকি এই বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন। তরুণী বলেন, যখন তিনি তার সন্তানকে চুমু খান, তখন তারা এমনভাবে তাকান যেন তিনি কোনো অন্যায় করছেন।
শুধু তাই নয়, শাশুড়ি নাকি নিয়মিতভাবে শিশুর স্নান করানো নিয়েও আপত্তি জানাচ্ছিলেন। তরুণী বারবার বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করেছেন যে, নাভির কটি শুকিয়ে যাওয়ার পরেই কেবল শিশুকে স্নান করানো উচিত।
কিন্তু শাশুড়ি তার কোনো কথাই শুনতে রাজি নন। এছাড়া, তিনি নাকি শিশুকে জল খাওয়ানো, কাপড় পরানো—এসব বিষয়েও মায়ের ইচ্ছের বিরুদ্ধে কাজ করতে চাইছেন।
সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো, ওই তরুণী যখন সন্তান জন্মদানের আট দিন পর শারীরিক দুর্বলতা নিয়ে ধুঁকছেন, তখন শাশুড়ি তাকে পরিবারের জন্য রান্না করার কথা বলেন। ওই তরুণী বলেন, তিনি কৃতজ্ঞ, কিন্তু মনে হচ্ছে তার ব্যক্তিগত পরিসরকে সম্পূর্ণভাবে অগ্রাহ্য করা হচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে অনেকেই বিভিন্ন মন্তব্য করেছেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ মনে করেন, সম্ভবত এটাই ওই পরিবারের স্বাভাবিক আচরণ। আবার কেউ বলছেন, তরুণীর এই অভিযোগগুলো একেবারে ভিত্তিহীন নয়।
তথ্যসূত্র: পিপল