শিশুদের জন্মদানকারী মায়েদের শরীরচর্চা ও স্ক্রিন টাইম নিয়ে নতুন নির্দেশনা, বিতর্ক তুঙ্গে!

প্রসব-পরবর্তী সময়ে মায়েদের শরীরচর্চা নিয়ে নতুন পরামর্শ, উদ্বেগে স্বাস্থ্য বিষয়ক সংস্থাগুলো

প্রসবের পর নতুন মায়েদের জন্য শরীরচর্চা বিষয়ক নতুন কিছু পরামর্শ দিয়েছে কানাডার একদল বিশেষজ্ঞ। তাদের মতে, সন্তান জন্ম দেওয়ার পর প্রথম তিন মাসে সপ্তাহে অন্তত দুই ঘণ্টা ব্যায়াম করা এবং রাতে ঘুমানোর আগে মোবাইল ফোন বা টিভির মতো স্ক্রিন ব্যবহার করা এড়িয়ে চলা উচিত। এই পরামর্শ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বেশ কয়েকটি স্বাস্থ্য বিষয়ক সংস্থা।

তাদের মতে নতুন মায়েদের জন্য এমন কঠোর নিয়ম অনুসরণ করা কঠিন হতে পারে।

কানাডার বিশেষজ্ঞরা তাদের গবেষণায় দেখেছেন, নিয়মগুলো মেনে চললে মায়েদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি হবে। তাদের পরামর্শ অনুযায়ী, সন্তান জন্ম দেওয়ার পরপরই, শারীরিক কোনো সমস্যা না থাকলে, নতুন মায়েদের কিছু বিষয় মেনে চলতে হবে।

এর মধ্যে রয়েছে, সপ্তাহে অন্তত দুই ঘণ্টা মাঝারি থেকে ভারী ব্যায়াম করা, যেমন— সাইকেল চালানো, দ্রুত হাঁটা বা পেশি শক্তিশালী করার ব্যায়াম। এছাড়াও, প্রতিদিন শ্রোণী অঞ্চলের পেশি (pelvic floor) সুসংহত করার ব্যায়াম করতে হবে এবং ঘুমের আগে স্ক্রিনের ব্যবহার এড়িয়ে চলতে হবে।

তবে, যুক্তরাজ্যের মাদার্সনেট (Mumsnet) এবং ন্যাশনাল চাইল্ডবোর্ড ট্রাস্ট (NCT)-এর মতো সংস্থাগুলো এই পরামর্শের সঙ্গে একমত হতে পারেনি। মাদার্সনেটের প্রধান নির্বাহী জাস্টিন রবার্টস বলেন, “নবজাতকের দেখাশোনার মধ্যে এই ধরনের পরামর্শ অনুসরণ করা বেশ কঠিন।

এনসিটির পরিষেবা উন্নয়ন ব্যবস্থাপক ক্যাথরিন ওয়াকার জানান, অস্ত্রোপচার বা অন্য কোনো জটিলতার কারণে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি সময় লাগতে পারে সেরে উঠতে। তাই তাড়াহুড়ো করে ব্যায়াম শুরু করার আগে সতর্ক থাকতে হবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সন্তান জন্ম দেওয়ার পর নতুন মায়েদের শরীরচর্চা করা প্রয়োজন, তবে তা ধীরে ধীরে শুরু করা উচিত। কারণ, সন্তান জন্ম দেওয়ার পর মায়েরা শারীরিক ও মানসিক উভয় দিক থেকে দুর্বল থাকেন।

এছাড়া, ঘুমের অভাব তো আছেই। তাই নতুন মায়েদের জন্য অতিরিক্ত কোনো চাপ তৈরি করা উচিত নয়।

ওয়েলবিং অফ উইমেন (Wellbeing of Women)-এর প্রধান নির্বাহী জ্যানেট লিন্ডসে জানান, ব্যায়াম উপকারী, তবে নতুন মায়েদের নিজেদের শরীরের কথা শুনে এবং তাদের জন্য সহজ এমনভাবে তা করা উচিত।

নতুন মায়েদের জন্য প্রসব-পরবর্তী সময়ে স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা গুরুত্বপূর্ণ। তবে, প্রতিটি মায়ের শারীরিক অবস্থা ভিন্ন হতে পারে।

তাই, কোনো ধরনের ব্যায়াম শুরু করার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। শরীরের প্রয়োজন অনুযায়ী ধীরে ধীরে ব্যায়ামের পরিমাণ বাড়ানো যেতে পারে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *