নিউ অরলিন্স-এর একটি জেল থেকে পালানো দুই কুখ্যাত আসামীর খোঁজে এখনো হন্যে হয়ে উঠেছে পুলিশ। এদের মধ্যে একজন, আন্তোয়ান ম্যাসি, একাধিকবার জেল থেকে পালিয়েছে এবং অন্যজন, ডেরেক গ্রোভস, ২০১৮ সালের মারডি গ্রাস উৎসবে জোড়া খুনের দায়ে অভিযুক্ত।
খবর অনুযায়ী, প্রায় দু’সপ্তাহ আগে এই দুই আসামীসহ আরও আটজন বন্দী অরলিন্স জাস্টিস সেন্টার থেকে পালিয়ে যায়।
পালিয়ে যাওয়া আটজনের মধ্যে কয়েকজনকে এরই মধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যাদের অধিকাংশই নিউ অরলিন্স এলাকা থেকে ধরা পড়েছে। তবে ম্যাসি ও গ্রোভস এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে।
তাদের ধরতে টেক্সাসসহ বিভিন্ন রাজ্যে চলছে ব্যাপক তল্লাশি।
মঙ্গলবার মিসিসিপির ন্যাটচেজ শহরে ম্যাসিকে দেখা গেছে বলে একটি খবর পাওয়া গিয়েছিল। স্থানীয় পুলিশ প্রধান ক্যাল গ্রিন জানান, সকাল সাড়ে আটটার দিকে ম্যাসিকে সেখানে দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল।
কিন্তু পরে জানা যায়, সন্দেহভাজন ব্যক্তিটি সম্ভবত ঐ এলাকায় নেই। অ্যাডামস কাউন্টির শেরিফ ট্র্যাভিস প্যাটেন নিশ্চিত করেছেন, ম্যাসি হয়তো ঐ এলাকায় ছিল, তবে এখন আর নেই।
আন্তোয়ান ম্যাসি’র বিরুদ্ধে এর আগেও একাধিকবার পালানোর অভিযোগ রয়েছে। ২০১৭ সালে, সশস্ত্র ডাকাতি ও গুরুতর হামলার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়ার পর, সে নিউ অরলিন্সের একটি কিশোর বন্দীশালা থেকে পালিয়ে যায়।
জানা যায়, তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১৫ বছর। সেই সময় বন্দীশালার একটি ভাঙা তালা ব্যবহার করে আরও পাঁচ কিশোরের সঙ্গে ম্যাসিও পালিয়ে যায়।
দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে পলাতক থাকার পর অবশেষে তাকে নিউ অরলিন্সের একটি মহাসড়ক থেকে ধরা হয়।
ম্যাসির পালানোর প্রবণতা এতটাই বেশি যে, সে ইলেক্ট্রনিক অ্যাংলেট মনিটরও দু’বার খুলে ফেলেছে। ঐ মনিটরিং কোম্পানির এক কর্মী জানিয়েছেন, ম্যাসিকে নিউ অরলিন্সের একটি জেলের নিচতলায় রাখা হয়েছিল, যেখানে দরজার লকগুলোও ছিল ত্রুটিপূর্ণ।
অন্যদিকে, ডেরেক গ্রোভস ২০১৮ সালের মারডি গ্রাস উৎসবে দুই ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যার দায়ে অভিযুক্ত। স্থানীয় প্রসিকিউটর অফিসের তথ্য অনুযায়ী, গ্রোভস এবং তার সঙ্গীরা এ কে-৪৭ রাইফেল দিয়ে একটি পারিবারিক অনুষ্ঠানে এলোপাথাড়ি গুলি চালিয়েছিল।
গ্রোভসকে দুটি সেকেন্ড-ডিগ্রি মার্ডার এবং দুটি সেকেন্ড-ডিগ্রি মার্ডারের চেষ্টার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে, যার কারণে তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে।
পলাতক আসামীদের ধরতে পুলিশ ব্যাপক তৎপরতা চালাচ্ছে এবং জনসাধারণের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অনুসন্ধান করছে। অরলিন্স প্যারিসের জেলা অ্যাটর্নি জেসন উইলিয়ামস জানিয়েছেন, পালিয়ে যাওয়া আসামীদের কিভাবে পালাতে সাহায্য করা হয়েছে, তা খুঁজে বের করার জন্য তদন্ত চলছে।
এর জন্য, ডিজিটাল ফরেনসিক টিম কারাগারের ভেতরের ফোন কলগুলো বিশ্লেষণ করছে। এর মাধ্যমে, ঘটনার আগের রাতে এবং ঘটনার কয়েক ঘণ্টা আগে তারা কাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল, তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।
পলাতক আসামীদের পালাতে যারা সাহায্য করেছে, তাদেরও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।
তথ্যসূত্র: সিএনএন