আকাশপ্রেমীদের জন্য সুখবর! নিউজিল্যান্ডের দক্ষিণ দ্বীপের একটি প্রত্যন্ত অঞ্চলে, তাহুনা গ্লেনোর্চি এখন আন্তর্জাতিক ডার্ক স্কাই স্যাংচুয়ারির মর্যাদা লাভ করেছে। এর ফলে জায়গাটি বিশ্বের অন্যতম সেরা তারা পর্যবেক্ষণের স্থান হিসেবে স্বীকৃতি পেল।
এই অঞ্চলের নির্মল পরিবেশে রাতের আকাশে তারাদের অপরূপ দৃশ্য উপভোগ করা যাবে, যা সাধারণ মানুষের কাছে এক দারুণ অভিজ্ঞতা।
গ্লেনোর্চি, কুইন্সটাউনের কাছে অবস্থিত, নিউজিল্যান্ডের দক্ষিণ দ্বীপের একটি অসাধারণ স্থান। প্রায় ২০,০০০ হেক্টর (প্রায় ৪৯,০০০ একর) এলাকা জুড়ে বিস্তৃত এই অভয়ারণ্যটি দেশের পঞ্চম এবং বিশ্বের মাত্র ২৩টির মধ্যে একটি।
এখানকার পাহাড়, উপত্যকা আর প্রকৃতির নিবিড় সান্নিধ্য রাতের আকাশকে আরও উজ্জ্বল করে তোলে, যা নক্ষত্র পর্যবেক্ষণের জন্য আদর্শ।
ডার্ক স্কাই স্যাংচুয়ারির ধারণাটা আসলে কী? সহজ ভাষায় বলতে গেলে, এটি এমন একটি স্থান যেখানে কৃত্রিম আলোর দূষণ খুবই কম থাকে। ফলে রাতের আকাশে তারাদের আলো অনেক বেশি স্পষ্টভাবে দেখা যায়।
উন্নত দেশগুলোতে, বিশেষ করে পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে এমন স্থান তৈরি করা হচ্ছে।
আবহাওয়ার কারণে এখানে রাতের আকাশ সবসময় পরিষ্কার থাকে। শুধু তাই নয়, এই অঞ্চলে ট্রেকিং এবং হাইকিংয়েরও দারুণ সুযোগ রয়েছে।
এখানকার রুক্ষ পাহাড় এবং সবুজ উপত্যকা দিনের বেলাতেও পর্যটকদের মন জয় করে। আর রাতের আকাশে তারা ঝলমলে দৃশ্য, যা ভ্রমণকারীদের জন্য এক অনন্য অভিজ্ঞতা তৈরি করে।
২০২৮ সালে এখানে একটি বিরল মহাজাগতিক ঘটনাও ঘটতে চলেছে। এই অঞ্চলে দেখা যাবে পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ।
এটি আকাশ প্রেমীদের জন্য একটি বিশেষ সুযোগ হবে, কারণ এই সময়ে রাতের আকাশে তারাদের আরও উজ্জ্বল দৃশ্য দেখা যাবে।
এই স্বীকৃতি সহজে আসেনি। তাহুনা গ্লেনোর্চি ডার্ক স্কাই গ্রুপের নিরলস প্রচেষ্টার ফল এটি। স্থানীয় ১২ জন বাসিন্দা, যারা বিভিন্ন প্রজন্মের প্রতিনিধিত্ব করেন, তাদের পাঁচ বছরের অক্লান্ত পরিশ্রমে এই অঞ্চলের পরিবেশকে তারা-পর্যটনের জন্য উপযুক্ত করে তোলা হয়েছে।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা এবং কমিউনিটির অংশগ্রহণে এটি সম্ভব হয়েছে।
আমাদের বাংলাদেশেও কি এমন কিছু করার সুযোগ আছে? দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে, বিশেষ করে যেখানে জনবসতি কম, সেখানেও এমন ডার্ক স্কাই স্যাংচুয়ারি তৈরি করা যেতে পারে।
সুন্দরবন বা পার্বত্য চট্টগ্রামের মতো স্থানে পর্যটকদের আকৃষ্ট করার পাশাপাশি, রাতের আকাশের সৌন্দর্য উপভোগের সুযোগ তৈরি করা যেতে পারে।
তথ্য সূত্র: ট্রাভেল অ্যান্ড লেজার