নতুন চুক্তির ব্যাখ্যা নিয়ে বিতর্ক: নিউজিল্যান্ডে কী হতে যাচ্ছে?

নিউজিল্যান্ডের আদিবাসী মাওরি সম্প্রদায়ের সঙ্গে দেশটির ঐতিহাসিক একটি চুক্তি নতুন করে ব্যাখ্যার প্রস্তাব নিয়ে আসা একটি বিল বাতিল করার সুপারিশ করেছে দেশটির পার্লামেন্টারি কমিটি।

এই বিলটি নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে উঠেছে, কারণ এটি মাওরি সম্প্রদায়ের অধিকারকে দুর্বল করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ওয়েটিংগি চুক্তি নামে পরিচিত এই ঐতিহাসিক চুক্তিটি নিউজিল্যান্ডের আদিবাসী মাওরি এবং ব্রিটিশ ক্রাউনের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়েছিল।

এই চুক্তির মূল লক্ষ্য ছিল মাওরি সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষা করা। তবে প্রস্তাবিত বিলে এই চুক্তির মূলনীতিগুলো নতুন করে সংজ্ঞায়িত করার কথা বলা হয়েছে, যা মাওরি সম্প্রদায়ের অধিকারের পরিপন্থী হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

বিলটি উত্থাপন করে ক্ষমতাসীন অ্যাক্ট পার্টি। বিলটি নিয়ে সংসদে ব্যাপক আলোচনা হয় এবং রেকর্ড সংখ্যক আপত্তি জমা পড়ে।

বিভিন্ন আইনজ্ঞ, শিক্ষাবিদ এবং সাধারণ মানুষ বিলটির তীব্র বিরোধিতা করেন। তাদের মতে, এই বিলটি মাওরিদের অধিকার খর্ব করবে এবং চুক্তির মূল চেতনাকে দুর্বল করবে।

এমনকি এই বিলের কারণে নিউজিল্যান্ড আন্তর্জাতিক মহলে হাসির পাত্র হতে পারে বলেও অনেকে মন্তব্য করেছেন।

পার্লামেন্টারি কমিটিতে শুনানির পর, কমিটির সদস্যরা বিলটি বাতিল করার সুপারিশ করেন।

কমিটির রিপোর্টে বলা হয়েছে, বিলটির বিপক্ষে আসা আপত্তির সংখ্যা ছিল বিপুল। বিরোধিতাকারীদের প্রধান অভিযোগ ছিল, বিলটি চুক্তির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয় এবং এর খসড়া তৈরিতেও ত্রুটি রয়েছে।

এছাড়া, এই বিল সামাজিক সংহতি নষ্ট করবে বলেও অনেকে মনে করেন।

যদিও অ্যাক্ট পার্টির নেতারা বলছেন, তারা গণভোটের মাধ্যমে জনগণের রায় জানতে চান।

তবে ক্ষমতাসীন ন্যাশনাল পার্টি এবং তাদের জোটসঙ্গী নিউজিল্যান্ড ফার্স্ট পার্টি জানিয়েছে, তারা বিলের বিপক্ষে ভোট দেবে।

ফলে বিলটি পাস হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টোফার লুক্সনও জানিয়েছেন, এই বিল নিয়ে বিতর্কিত বিষয়গুলো এখন মীমাংসা করা দরকার।

এই ঘটনার মাধ্যমে নিউজিল্যান্ডে আদিবাসী অধিকার এবং সরকারের মধ্যে সম্পর্ক আরও একবার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছে।

ওয়েটিংগি চুক্তির ভবিষ্যৎ এবং মাওরি সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষার বিষয়টি এখন বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *