যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের কাছে অবস্থিত নিউয়ার্ক লিবার্টি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে (EWR) ফ্লাইট পরিচালনায় অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে। বিমানবন্দরটিতে ফ্লাইট বিলম্বিত হওয়ার পাশাপাশি বাতিলও হচ্ছে নিয়মিত।
ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (FAA) এ বিষয়ে জরুরি পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে। জানা গেছে, বিমানবন্দরের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল বিভাগে জনবল সংকট, সরঞ্জামাদির সমস্যা এবং রানওয়ে সংস্কারের কারণে এই অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পরিবহন মন্ত্রী শেন ডাফি জানিয়েছেন, বিমান সংস্থাগুলোর সঙ্গে বুধবার একটি জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এই বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য হলো নিউয়ার্ক বিমানবন্দরে নিয়মিত ফ্লাইট চলাচল নিশ্চিত করা।
তিনি আরও বলেন, “পরিবারগুলোকে যেন ফ্লাইটের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে না হয়।”
বিমানবন্দরের ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণকারী ফিলাডেলফিয়ার একটি কেন্দ্রে কর্মী সংকটের কারণে গত দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে এই সমস্যা চলছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে রানওয়ে সংস্কারের কাজ এবং বিমানবন্দরের অতিরিক্ত ব্যস্ততা।
FAA এর তথ্য অনুযায়ী, নিউয়ার্ক বিমানবন্দরের ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রয়োজনীয় ৩৭ জন কন্ট্রোলারের মধ্যে বর্তমানে মাত্র ২৪ জন কর্মরত আছেন। আগামী বছর এদের মধ্যে ১৬ জন নিউইয়র্কের FAA-এর অন্য একটি কেন্দ্রে ফিরে যাবেন।
এছাড়াও, গত ২৮শে এপ্রিল একটি ঘটনার পর পাঁচজন কন্ট্রোলার ৪৫ দিনের ট্রমা ছুটিতে যান। ওই দিন রাডার স্ক্রিন ৯০ সেকেন্ডের জন্য এবং রেডিও ৩০ সেকেন্ডের জন্য বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।
এসব কারণে ১৫ই এপ্রিল থেকে রানওয়ে সংস্কার শুরু হওয়ার পর থেকে প্রতিদিন গড়ে ৩৪টি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। বিমানবন্দরের গড় বিলম্বের সময় ছিল ১৩৭ মিনিট।
FAA বলছে, “বর্তমান পরিস্থিতিতে EWR একটি অত্যন্ত ব্যস্ত বিমানবন্দর। এই মুহূর্তে নির্ধারিত ফ্লাইটের সংখ্যা পরিচালনা করতে এটি অক্ষম।”
সমস্যার সমাধানে বিমান সংস্থাগুলোকে ফ্লাইট কমানোর প্রস্তাব দিতে বলা হয়েছে। ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স নামক একটি সংস্থা বিমানবন্দরের জন্য ফ্লাইটের ‘স্লট’ নির্ধারণের প্রস্তাব দিয়েছে।
এই ‘স্লট’ পদ্ধতিতে প্রতিটি ফ্লাইটের জন্য সরকারের অনুমোদনের প্রয়োজন হবে।
FAA-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, রানওয়ে সংস্কারের কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত, যা ১৫ই জুন পর্যন্ত চলবে, প্রতিদিন অভ্যন্তরীণ রুটে ২৮টি ফ্লাইট অবতরণ ও ২৮টি উড্ডয়ন করতে পারবে।
এছাড়া, ছুটির দিনগুলোতেও এই নিয়ম কার্যকর থাকবে। অন্য সময়গুলোতে এই সংখ্যা ৩৪ পর্যন্ত বাড়ানো হতে পারে।
আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনার বিষয়ে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। নিউইয়র্কের এই বিমানবন্দরটি আন্তর্জাতিক রুটে বাংলাদেশের যাত্রীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ট্রানজিট পয়েন্ট।
এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশি যাত্রীদেরও এই ফ্লাইট বিলম্বের কারণে সমস্যায় পড়তে হতে পারে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন