শিরোনাম: খবর অ্যালার্টের জ্বালা: স্মার্টফোন ব্যবহারকারীরা কি অতিষ্ঠ?
স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের কাছে খবর জানার সহজ উপায় হলো বিভিন্ন নিউজ সাইট ও অ্যাপ থেকে আসা নোটিফিকেশন বা অ্যালার্ট। কিন্তু সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, অনেক ব্যবহারকারী এই খবর জানানোর পদ্ধতি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন।
রয়টার্স ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অফ জার্নালিজম এর এক জরিপে উঠে এসেছে, স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের মধ্যে খবর অ্যালার্ট বন্ধ করে দেওয়ার প্রবণতা বাড়ছে।
গবেষণা অনুযায়ী, প্রতি সপ্তাহে প্রায় ৭৯ শতাংশ উত্তরদাতা কোনো খবর অ্যালার্ট পান না। আর যারা পান না, তাদের মধ্যে প্রায় ৪৩ শতাংশ সচেতনভাবে এই ধরনের নোটিফিকেশন বন্ধ করে দিয়েছেন।
এর প্রধান কারণ হিসেবে জানা গেছে, হয় তারা অতিরিক্ত অ্যালার্ট পান, অথবা তাদের কাছে মনে হয় এই খবরগুলো তেমন প্রয়োজনীয় নয়।
গবেষণার প্রধান গবেষক, নিক নিউম্যান জানিয়েছেন, খবর সরবরাহকারীরাও এই বিষয়ে সচেতন।
তারা চেষ্টা করেন, দিনে কতগুলো অ্যালার্ট পাঠানো হবে, খবরের বিষয়বস্তু কী হবে এবং কখন পাঠালে ব্যবহারকারীর জন্য তা উপযুক্ত হবে, সে বিষয়ে একটি নির্দিষ্ট নিয়ম মানতে।
যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের উদাহরণ দিয়ে বলা যায়, গত এক দশকে খবর অ্যালার্টের ব্যবহার বেড়েছে।
উদাহরণস্বরূপ, ২০১৪ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রে খবর অ্যালার্ট গ্রহণকারীর সংখ্যা ৬ শতাংশ থেকে বেড়ে ২৩ শতাংশ হয়েছে, আর যুক্তরাজ্যে এই সংখ্যা ৩ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৮ শতাংশ হয়েছে।
নিউম্যান আরও যোগ করেন, “ব্যবহারকারীরা তাদের মোবাইলে আসা বিভিন্ন ধরনের নোটিফিকেশনে অতিষ্ঠ হয়ে পড়ছেন।
এর মধ্যে খবর সরবরাহকারী বিভিন্ন অ্যাপ, স্পোর্টস স্কোর, ক্যালেন্ডার সংক্রান্ত অনুরোধ, মেসেজিং গ্রুপ এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের আপডেট অন্যতম।”
গবেষণায় আরও দেখা গেছে, যুক্তরাজ্যে গুগল নিউজ এবং অ্যাপল নিউজের মতো খবর সরবরাহকারী অ্যাপগুলো ব্যাপক জনপ্রিয়।
তবে অনেক ব্যবহারকারী অভিযোগ করেছেন, একই বিষয়ে তারা একাধিকবার নোটিফিকেশন পান।
যুক্তরাষ্ট্রে, জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ১৬ শতাংশ জানিয়েছেন, তারা গত সপ্তাহে সিএনএন থেকে অন্তত একটি খবর অ্যালার্ট পেয়েছেন।
এরপর ছিল গুগল নিউজ (১৩%) এবং ফক্স নিউজ (১১%)।
নিক নিউম্যানের মতে, “ব্যবহারকারীদের আপ-টু-ডেট রাখতে এবং ঘটনার অন্যরকম দিক তুলে ধরতে অ্যালার্ট খুবই উপযোগী।
তবে যখন অতিরিক্ত সংবেদনশীল শিরোনাম ব্যবহার করা হয় অথবা অপ্রাসঙ্গিক খবর পাঠানো হয়, তখন এর গ্রহণযোগ্যতা কমে যায়।”
যদিও এই গবেষণাটি মূলত বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে করা হয়েছে, তবে এর কিছু দিক আমাদের দেশের ব্যবহারকারীদের জন্যেও প্রাসঙ্গিক হতে পারে।
বাংলাদেশে এখনো এ ধরনের কোনো গবেষণা হয়নি, তবে স্মার্টফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এখানেও খবর অ্যালার্টের ব্যবহার বাড়ছে।
আপনার কি মনে হয়, আপনিও খবর অ্যালার্টের চাপে অতিষ্ঠ?
তথ্য সূত্র: সিএনএন