আন্ডারডগ ‘নিক রকেট’-এর গ্র্যান্ড ন্যাশনাল জয়, আবেগঘন দৃশ্যে বাঁধনহারা মুলিন্স পরিবার। অবিস্মরণীয় এক জয়! প্রতিকূলতাকে জয় করে ‘নিক রকেট’ নামের একটি ঘোড়া জয় ছিনিয়ে এনেছে গ্র্যান্ড ন্যাশনাল।
আর এই জয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন খ্যাতিমান প্রশিক্ষক উইলি মুলিন্স এবং তাঁর ছেলে প্যাট্রিক মুলিন্স। খেলার মাঠে এমন দৃশ্য সাধারণত দেখা যায় না, কিন্তু রবিবার (৭ এপ্রিল) যেন সব হিসেব বদলে গিয়েছিল।
সাধারণত খেলাধুলার জগতে সাফল্যের আনন্দ প্রকাশে উইলি মুলিন্সকে খুব একটা আবেগপ্রবণ হতে দেখা যায় না। কিন্তু রবিবার রাতে জয় যখন ধরা দিল, তখন যেন বাঁধ ভেঙে গিয়েছিল তাঁর।
খেলোয়াড় এবং প্রশিক্ষক—দুইয়েরই চোখে জল দেখা যায়। ঘোড়ার মালিক ছিলেন প্রয়াত সাডি অ্যান্ড্রু। তাঁর মৃত্যুর পর এই জয় যেন শোকের আবহ সরিয়ে আনন্দের বার্তা নিয়ে আসে।
প্যাট্রিক মুলিন্স ছিলেন ‘নিক রকেট’-এর আরোহী। খেলার শুরুতে তাঁর দল তেমন ফেভারিট ছিল না, কিন্তু মাঠের লড়াইয়ে বাজিমাত করে দেয় তারা।
এই জয়ে সবচেয়ে বেশি আবেগতাড়িত হতে দেখা যায় উইলি মুলিন্সকে। ছেলের এই সাফল্যে তিনি এতটাই আপ্লুত হয়েছিলেন যে, সংবাদ মাধ্যমের ক্যামেরার সামনে চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি।
উইলি মুলিন্স শুধু একজন প্রশিক্ষকই নন, বরং তিনি একজন কিংবদন্তি। তাঁর প্রশিক্ষণে সাফল্যের শিখরে পৌঁছেছে বহু ঘোড়া।
তাঁর সাফল্যের অন্যতম কারণ হলো খেলার প্রতি তাঁর নিবেদন এবং কৌশল। সেই অভিজ্ঞতার প্রমাণ পাওয়া গেল এই গ্র্যান্ড ন্যাশনাল জয়ের মধ্য দিয়ে।
অন্যদিকে, ঘোড়ার মালিকের স্বামী, স্টুয়ার্ট অ্যান্ড্রু জানান, তাঁর স্ত্রী সাডি সবসময় চাইতেন, উইলি মুলিন্স যেন তাঁর ঘোড়াটিকে প্রশিক্ষণ দেন।
তাঁর সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। সাডির মৃত্যুর পর এই জয় যেন তাঁর প্রতি উৎসর্গ করা হলো।
প্যাট্রিক মুলিন্স, যিনি পেশাগতভাবে একজন অপেশাদার জকি, তাঁর বাবার এই সাফল্যে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “ছোটবেলা থেকে গ্র্যান্ড ন্যাশনাল সম্পর্কে বই পড়েছি, আর আজ আমার নাম সেখানে যুক্ত হলো, এটা অসাধারণ।”
এই জয়ের পেছনে ছিল ঘোড়ার অসাধারণ দৌড়। প্যাট্রিক মুলিন্স আরও যোগ করেন, “ঘোড়াটি খুবই সাহসী ছিল। দৌড়ের সময় সে তার সেরাটা দিয়েছে।”
এই জয় শুধু একটি ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতার ফল নয়, বরং এটি একটি পরিবার এবং তাদের স্বপ্নের জয়।
বাবার প্রশিক্ষণে ছেলের সাফল্য, প্রয়াত স্ত্রীর প্রতি উৎসর্গীকৃত জয়—সবকিছু মিলেমিশে এক আবেগঘন পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছিল।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান