শিরোনাম: নাইজেরিয়ায় বিপন্ন কচ্ছপ উদ্ধার, মৎস্যজীবীদের পুরষ্কার দিচ্ছে সংরক্ষণ সংস্থা।
আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়ার উপকূলীয় শহর লাগোসে, সমুদ্রের বুকে আবারও ফিরে গেল বিপন্নপ্রায় কচ্ছপের দল। সেখানকার একটি পরিবেশ সংরক্ষণ সংস্থা, গ্রিনফিঙ্গার্স ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন ইনিশিয়েটিভ-এর উদ্যোগে এই কচ্ছপগুলোকে উদ্ধার করা হয়।
জানা গেছে, স্থানীয় মৎস্যজীবীদের জালে আটকা পড়া কচ্ছপদের উদ্ধার করে তাদের পুনর্বাসন করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, এই কাজে উৎসাহ দিতে মৎস্যজীবীদের পুরস্কৃতও করা হচ্ছে।
সংস্থাটির প্রতিষ্ঠাতা, চিনেদু মোগবো জানান, “স্থানীয় জেলেদের কাছে কচ্ছপ হয়তো শুধু খাদ্য, বন্যপ্রাণী সম্পর্কে তাদের তেমন কোনো ধারণা নেই।” লাগোসের আশেপাশে, বিশেষ করে আটলান্টিক মহাসাগরের কাছাকাছি অঞ্চলে, কচ্ছপ একটি গুরুত্বপূর্ণ সামুদ্রিক প্রাণী।
কিন্তু অতিরিক্ত মাছ ধরা এবং সচেতনতার অভাবে এই অঞ্চলের কচ্ছপেরা আজ বিলুপ্তির পথে। সেখানকার পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে, ডিম পাড়ার জন্য কচ্ছপেরা প্রায় আসেই না।
জানা গেছে, নাইজেরিয়াতে প্রায় ২৩টি প্রজাতি চরমভাবে বিপদগ্রস্ত অবস্থায় রয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অফ নেচার (আইইউসিএন)-এর মতে, বন্যপ্রাণী পাচারের অন্যতম কেন্দ্র হয়ে উঠেছে নাইজেরিয়া।
জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং বন্যপ্রাণী সম্পর্কে সচেতনতার অভাব এই পাচারের মূল কারণ।
ওয়াইল্ড আফ্রিকা-র পশ্চিম আফ্রিকা প্রতিনিধি মার্ক ওফুয়া বলেছেন, “নাইজেরিয়ার বিপন্ন বন্যপ্রাণীগুলো দ্রুত তাদের আবাস হারাচ্ছে, যা জীববৈচিত্র্যের জন্য এক বিরাট হুমকি।”
সংস্থাটি জানায়, উদ্ধার হওয়া কচ্ছপগুলোকে প্রথমে একটি আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা ও পরিচর্যা করার পর সমুদ্রে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
মোগবোর মতে, আগে কচ্ছপ উদ্ধারের পর তাদের আবারও জেলেদের জালে আটকা পড়তে দেখা গেছে। তাই জেলেদের সচেতন করতে এবং তাদের সহযোগিতা পেতে পুরস্কারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
কোনো জেলে যদি জালে আটকা পড়া কচ্ছপ উদ্ধার করে দেন, তবে তাদের মাছ ধরার সরঞ্জাম দেওয়া হয়। এমনকি, কচ্ছপের ডিমের সন্ধান দিলেও পুরস্কৃত করা হয়।
কচ্ছপগুলোকে সমুদ্রে ফিরিয়ে দেওয়ার সময় উপস্থিত ছাত্র-ছাত্রীরা এই দৃশ্য দেখে মুগ্ধ হয়। তাদেরই একজন, অ্যাভিয়েল ইজেডনমি বলেন, “বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আমার খুবই পছন্দের।
নাইজেরিয়ার মতো একটি দেশে এমন উদ্যোগ সত্যিই খুব গুরুত্বপূর্ণ।” বর্তমানে, সারা বিশ্বেই বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে জোর দেওয়া হচ্ছে।
আমাদের বাংলাদেশেও বাঘ, ডলফিনসহ বিভিন্ন বিপন্ন প্রজাতির প্রাণী রক্ষার জন্য নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। পরিবেশ রক্ষার গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা এখন সময়ের দাবি।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস