বিশ্ব রেকর্ড গড়ার স্বপ্নে বিভোর, ভিসা জটিলতায় স্বপ্নভঙ্গ! পাসপোর্ট নিয়ে যা বললেন নাইজেরিয়ান তরুণী

বিশ্বজুড়ে পাসপোর্ট বৈষম্য: নাইজেরীয় ভ্রমণকারীর অভিজ্ঞতা

বিশ্বের দ্রুততম সময়ে প্রতিটি মহাদেশে ভ্রমণের বিশ্ব রেকর্ড গড়তে চেয়েছিলেন নাইজেরিয়ার ভ্রমণ বিষয়ক কনটেন্ট ক্রিয়েটর আলমা আসিনোবি। কিন্তু ভিসা জটিলতা এবং বিমান বিলম্বের কারণে তার এই প্রচেষ্টা সফল হয়নি।

তবে, তিনি তার এই যাত্রাপথে পাসপোর্ট বৈষম্যের বিষয়টি বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছেন।

আসলে, উন্নত বিশ্বের অনেক দেশের নাগরিকের তুলনায় কিছু দেশের নাগরিকদের আন্তর্জাতিক ভ্রমণে নানান ধরনের অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়। আসিনোবি সেই বিষয়টিই তুলে ধরেছেন।

তার মতে, কিছু দেশের পাসপোর্টধারীদের ভ্রমণের ক্ষেত্রে বিশেষ সুযোগ-সুবিধা থাকে, যা অনেক দেশের মানুষের কাছে সহজলভ্য নয়। এই সুযোগের অভাবে অনেক সময় তাদের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ থেকে বঞ্চিত হতে হয়।

আলমা আসিনোবি চেয়েছিলেন ৬৪ ঘণ্টার মধ্যে পৃথিবীর সব মহাদেশ ঘুরে বিশ্বরেকর্ড গড়তে। কিন্তু নানা কারণে তিনি তার লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেননি।

তার যাত্রা পথে ভিসাসংক্রান্ত জটিলতা ছিল প্রধান বাধা। নাইজেরিয়ার পাসপোর্ট সূচকে দুর্বল অবস্থানের কারণে তাকে অনেক দেশে প্রবেশের অনুমতি পেতে বেগ পেতে হয়েছে।

হেনলি পাসপোর্ট ইনডেক্সে নাইজেরিয়ার পাসপোর্ট ৯২তম স্থানে রয়েছে, যেখানে বাংলাদেশের অবস্থান তুলনামূলকভাবে বেশ নিচে।

এর ফলস্বরূপ, আসিনোবিকে বিভিন্ন বিমানবন্দরে অতিরিক্ত চেকিংয়ের শিকার হতে হয়েছে।

ভিসা পাওয়ার জটিলতাগুলো আসিনোবিকে হতাশ করেছিল। তিনি জানান, উন্নত দেশগুলোতে ভিসার জন্য আবেদন করতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয় এবং অনেক ক্ষেত্রে তা প্রত্যাখ্যানও করা হয়।

তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, ভিসা জটিলতার কারণে অনেকে বিদেশে গুরুত্বপূর্ণ মিটিং বা সম্মেলনে যোগ দিতে পারেন না। এমনকি, সময়মতো ভিসা না পাওয়ার কারণে প্রিয়জনের চিকিৎসার সুযোগও হাতছাড়া হয়ে যায়।

আসীনোবি তার ভ্রমণকালে শুধু যে অসুবিধাই অনুভব করেছেন তা নয়, বরং তিনি ভ্রমণ বিষয়ক কনটেন্ট তৈরি করে অন্যদের উৎসাহিত করেছেন।

তিনি তার অভিজ্ঞতার আলোকে পাসপোর্ট বৈষম্যের বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি করতে চেয়েছেন।

তিনি মনে করেন, উন্নত দেশগুলোর সরকারগুলোর মধ্যে ভালো কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করা উচিত, যাতে উন্নয়নশীল দেশগুলোর মানুষ শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ থেকে বঞ্চিত না হয়।

আসিনোবি শুধু বিশ্বরেকর্ড গড়তে চাননি, বরং তিনি নাইজেরিয়ার একটি পতাকায় ভ্রমণের স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে স্বাক্ষর সংগ্রহ করেছেন।

এই পতাকাটিতে ৬০০ জনেরও বেশি মানুষের স্বাক্ষর রয়েছে। গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড কর্তৃপক্ষের স্বীকৃতি পেলে তিনি এই কীর্তির জন্যেও পরিচিত হবেন।

পাসপোর্ট বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি, আসিনোবি সরকারের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধানে কাজ করতে চান।

তার মতে, উন্নত দেশগুলোর নীতিনির্ধারকদের এই বিষয়ে আরও মনোযোগী হওয়া উচিত, যাতে ভ্রমণ সবার জন্য সহজ হয়।

তথ্যসূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *