ডমিনিকান রিপাবলিকে একটি নাইটক্লাবের ছাদ ধসে পড়ার ঘটনায় ২৬০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যুর ঘটনায় নাইটক্লাবের মালিক ও তাঁর বোনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত এপ্রিলে ঘটে যাওয়া এই ভয়াবহ ঘটনার পর জনমনে শোকের ছায়া নেমে আসে।
ঘটনার দুই মাস পর, ১২ই জুন, কর্তৃপক্ষ এই দুই ভাইবোনকে গ্রেপ্তার করে।
আটককৃতদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ক্লাবের ছাদ ধসের ঘটনা প্রতিরোধের জন্য তাঁরা কোনো ব্যবস্থা নেননি। সরকারি কৌঁসুলিরা জানিয়েছেন, অভিযুক্তদের চরম দায়িত্বজ্ঞানহীনতা ও গাফিলতির কারণেই এতগুলো মানুষের জীবনহানি ঘটেছে এবং অনেকে আহত হয়েছেন।
রাজধানী সান্টো ডমিঙ্গোর জেট সেট নাইটক্লাবে এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে। ঘটনার সময় জনপ্রিয় মেরিংউ সঙ্গীতশিল্পী রুবি পেরেজ সেখানে পারফর্ম করছিলেন এবং তিনিও নিহতদের মধ্যে একজন।
এছাড়াও নিহতদের মধ্যে ছিলেন প্রাক্তন বেসবল খেলোয়াড় অক্টাভিও ডোটেল ও টনি ব্লাঙ্কো এবং মন্টেক্রিস্তি প্রদেশের গভর্নর নেলসি ক্রুজ। উল্লেখ্য, নেলসি ক্রুজ ছিলেন প্রাক্তন মেজর লিগ বেসবল তারকা নেলসন ক্রুজের বোন।
ঘটনার পর নাইটক্লাবের মালিক আন্তোনিও এস্পাইলাত জানিয়েছিলেন, তিনি তদন্তে সহযোগিতা করবেন। তিনি ভুক্তভোগীদের পরিবারের প্রতি গভীর দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, এই ঘটনায় তিনি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়ে গিয়েছেন।
জানা যায়, জেট সেট নাইটক্লাবটি আন্তোনিও এবং তাঁর বোন মারিবিল তাঁদের মায়ের কাছ থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছিলেন। তাঁদের মা ক্লাবটি প্রতিষ্ঠা করেন, যখন আন্তোনিও-র বয়স ছিল মাত্র ৬ বছর।
ঘটনার দিন ক্লাবটি তাদের ৫০তম বার্ষিকী উদযাপন করছিল।
আন্তোনিও অবশ্য স্থানীয় একটি টেলিভিশন অনুষ্ঠানে জানিয়েছিলেন, ছাদের অবস্থা সম্পর্কে আগে থেকে কোনো ধারণা ছিল না। তবে শোনা যায়, ক্লাবটির শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের কারণে ছাদের জল নিরোধক ব্যবস্থা নিয়ে বেশ কয়েক বছর ধরে সমস্যা চলছিল।
ডমিনিকান রিপাবলিকের প্রেসিডেন্ট লুইস অবিনাডার এই ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং উদ্ধারকাজে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন।
সরকারি কৌঁসুলিরা জানিয়েছেন, অভিযুক্ত এস্পাইলাত ভাইবোন ডমিনিকান রিপাবলিকের প্রভাবশালী ব্যবসায়ী এবং তাঁদের মালিকানায় বেশ কয়েকটি বিনোদন কেন্দ্র ও রেডিও স্টেশন রয়েছে। তাঁরা নাকি এই মামলার সাক্ষী হতে পারেন এমন কর্মীদের ভয় দেখানোর চেষ্টা করেছিলেন।
ছাদ ধসের কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত এখনো চলছে।
বর্তমানে বাংলাদেশেও ভবন নির্মাণ এবং রক্ষণাবেক্ষণে নিরাপত্তা বিষয়ক সচেতনতা বাড়ছে। জনবহুল স্থানে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং নির্মাণশৈলীতে ত্রুটি থাকলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।
এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করতে কর্তৃপক্ষের আরও কঠোর হওয়া উচিত।
তথ্য সূত্র: পিপল