আতঙ্কের ঢেউ! গবেষণা বিভ্রাটের জেরে এনআইএইচ-এর টাউন হলে কর্মীদের বিদ্রোহ

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউটস অফ হেলথ (এনআইএইচ)-এর কর্মীদের মধ্যে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। সম্প্রতি, এনআইএইচ-এর পরিচালক ড. জে ভট্টাচার্যের সঙ্গে এক আলোচনা সভায় কর্মীরা প্রতিবাদস্বরূপ সভা ত্যাগ করেন। গবেষণা খাতে সম্ভাব্য কাটছাঁট, গবেষণা পদ্ধতির পরিবর্তন এবং আদর্শগত বিভাজন সহ বিভিন্ন কারণে এই অসন্তোষ তৈরি হয়েছে।

গত সপ্তাহে অনুষ্ঠিত এই আলোচনা সভায় ড. ভট্টাচার্য কোভিড-১৯ মহামারী নিয়ে এক বিতর্কিত মন্তব্য করেন। তিনি জানান, এমন সম্ভবনা রয়েছে যে এনআইএইচ-এর অর্থায়নে হওয়া কোনো গবেষণার ফলস্বরূপ এই অতিমারীর সৃষ্টি হয়েছে। এরপরই, সভাস্থল ত্যাগ করেন বহু কর্মী।

কর্মীদের এই প্রতিবাদ ছিল মূলত, গবেষণা খাতে বরাদ্দ কমানো, কর্মীদের ছাঁটাই এবং কাজের পরিবেশ নিয়ে কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার বিরুদ্ধে।

জানা যায়, এনআইএইচ-এর কর্মীরা এই মুহূর্তে গবেষণা সামগ্রী সংগ্রহ করতে সমস্যা সম্মুখীন হচ্ছেন, কারণ এর সঙ্গে জড়িত কর্মীদের অনেককে ছাঁটাই করা হয়েছে। এছাড়া, গবেষণা খাতে ৪০ শতাংশ বাজেট কমানোর প্রস্তাবও কর্মীদের উদ্বেগের কারণ।

কর্মীদের আশঙ্কা, এমনটা হলে তাদের দৈনন্দিন গবেষণা কার্যক্রম ব্যাহত হবে।

কর্মীরা বলছেন, তাঁরা পরিচালক ড. ভট্টাচার্যের সঙ্গে একটি আলোচনার জন্য বহুবার চেষ্টা করেছেন, কিন্তু কোনো সাড়া পাননি। তাঁদের মতে, এই ধরনের আলোচনা সভার পরিবর্তে বিজ্ঞানীদের সঙ্গে সরাসরি বসে তাঁদের উদ্বেগের বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা উচিত, যা জনগণের স্বাস্থ্য উন্নয়নে সহায়তা করবে।

এই ঘটনার কারণ হিসেবে আরও জানা যায়, এনআইএইচ-এর নীতিমালায় পরিবর্তন আনা হচ্ছে, যার ফলে বিদেশি গবেষণা প্রকল্পের জন্য অর্থায়ন বন্ধ হয়ে যেতে পারে। অনেক বিজ্ঞানী মনে করেন, এর ফলে পরবর্তী মহামারী প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজনীয় গবেষণা ব্যাহত হতে পারে।

আলোচনা সভায় কর্মীদের মধ্যে অন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল বৈচিত্র্য, সমতা এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক নীতি (ডিইআই)। এই নীতির প্রতি কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েও অনেকে প্রশ্ন তোলেন। ড. ভট্টাচার্য জানান, তিনি ব্যক্তিগতভাবে সংখ্যালঘুদের নিয়ে গবেষণা করতে আগ্রহী, তবে এমন কিছু গবেষণা রয়েছে যা তিনি বৈজ্ঞানিক বলে মনে করেন না।

কর্মীদের মধ্যে অনেকেই এই মতের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন।

এনআইএইচ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কর্মীরা আলোচনার সুযোগ পেলেও তাঁরা তা গ্রহণ করেননি। তবে, কর্মীরা বলছেন, তাঁদের এই প্রতিবাদ শুধুমাত্র একটি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর পর্বের চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করার উদ্দেশ্যে ছিল।

তাঁদের মতে, গবেষণা খাতে হওয়া এই ক্ষতি, ক্যান্সার, ডায়াবেটিস এবং আলঝাইমার্সের মতো রোগের গবেষণাগুলোর জন্য হুমকি স্বরূপ।

তথ্যসূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *