নাইকির নয়া চমক! ভারতের ঐতিহ্যবাহী ডিজাইনে মুগ্ধ বিশ্ব!

বিশ্বখ্যাত ক্রীড়া সামগ্রী প্রস্তুতকারক নাইকি এবার ভারতীয় ফ্যাশন ব্র্যান্ড নরব্ল্যাক নরহোয়াইটের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তৈরি করেছে নতুন এক স্পোর্টসওয়্যার সংগ্রহ। এই পোশাকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ভারতের ঐতিহ্যবাহী ‘বান্ধনী’ পদ্ধতির টাই-ডাই নকশা, যা প্রায় ৫ হাজার বছরের পুরনো।

খেলাধুলার সঙ্গে ভারতীয় সংস্কৃতি ও নারী ক্ষমতায়নকে এক সূত্রে গাঁথার লক্ষ্য নিয়েই নাইকির এই উদ্যোগ।

নতুন এই সংগ্রহের প্রচারের জন্য নাইকি ভারতীয় নারী ক্রিকেটার জেমিমাহ রদ্রিগেজ, শাফালি ভার্মা, কুস্তিগীর অংশু মালিক এবং দৌড়বিদ প্রিয়া মোহনের ছবি ব্যবহার করেছে। জয়পুরের ঐতিহাসিক স্থানগুলোতে, বিশেষ করে সেখানকার বিখ্যাত ‘স্টেপওয়েল’-এ তোলা হয়েছে এই ছবিগুলো।

খ্যাতনামা ফ্যাশন ফটোগ্রাফার ভারত সিক্কা এই ছবিগুলো তুলেছেন।

ভারতে নাইকির ব্যবসা নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। ১৯৯৫ সালে লাইসেন্সিং চুক্তির মাধ্যমে ভারতে প্রবেশ করে তারা।

এরপর ২০০৪ সালে তারা নিজস্ব শাখা খোলে। ২০০৫ সালে ভারতীয় ক্রিকেট দলের পোশাকের জন্য তারা একটি বড় চুক্তিও করে, যেখানে তাদের প্রতিযোগী ছিল অ্যাডিডাস এবং রিবোক।

কিন্তু এরপর বাজারে নিজেদের অবস্থান শক্ত করতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে নাইকিকে। জানা যায়, ২০১৯ সাল পর্যন্ত ভারতে তাদের দোকানের সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছিল ১৫০টিতে, যেখানে একসময় তা ছিল প্রায় ৩৫০টি।

বর্তমানে তাদের ওয়েবসাইটে ভারতে মাত্র ৯৩টি দোকানের তালিকা দেখা যায়, যেখানে চীনে তাদের ২,৬০০টির বেশি দোকান রয়েছে।

তবে, নাইকি এখন তাদের নারী পোশাকের ব্যবসায় জোর দিচ্ছে। তাদের সাম্প্রতিক কয়েকটি প্রচারে নারী ক্রীড়াবিদদের গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

উদাহরণস্বরূপ, এই বছরের সুপার বোল-এর বিজ্ঞাপনে বাস্কেটবল খেলোয়াড় ক্যাটলিন ক্লার্ক এবং দৌড়বিদ শ্যাকারি রিচার্ডসনকে দেখা গেছে।

নরব্ল্যাক নরহোয়াইটের সঙ্গে করা এই সংগ্রহে রয়েছে হুডি, ট্যাঙ্ক টপ, টি-শার্ট ও স্পোর্টস ব্রা’র মতো পোশাক। এছাড়াও, ক্রস-বডি ব্যাগ এবং এয়ারম্যাক্স-এর মতো স্নিকার্সও রয়েছে।

পোশাকগুলোতে ব্যবহৃত ‘বান্ধনী’ নকশা কাপড়কে আকর্ষণীয় করে তোলে। এই পদ্ধতিতে কাপড়ে নানা ধরনের জ্যামিতিক আকার ফুটিয়ে তোলা হয়।

নরব্ল্যাক নরহোয়াইটের প্রতিষ্ঠাতা, কানাডীয় বংশোদ্ভূত ডিজাইনার মৃগা কাপাদিয়া ও অমৃত কুমার, ২০১০ সালে ভারতে এসে এই ব্র্যান্ড তৈরি করেন। তাদের ডিজাইনগুলোতে স্থানীয় কারুশিল্পের ছোঁয়া পাওয়া যায়।

নাইকির ওয়েবসাইটে দেওয়া এক বিবৃতিতে মৃগা কাপাদিয়া জানিয়েছেন, “আমরা ভারতের কারুশিল্প এবং এর সঙ্গে জড়িত মানুষের প্রতি গভীরভাবে শ্রদ্ধাশীল।

এই সংগ্রহ ভারতীয় সংস্কৃতির কঠোরতা, নিষ্ঠা ও ঐতিহ্যকে তুলে ধরে। আমরা আশা করি, প্রতিটি পোশাক নারীদের খেলাধুলার প্রতি আকৃষ্ট করবে এবং দৈনন্দিন জীবনে তাদের আত্মবিশ্বাস যোগাবে।”

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *