নয়াদিল্লি, ২৬শে মে, ২০২৪
বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় ক্রীড়া সামগ্রী প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান নাইকি তাদের ব্যবসার ধরনে কিছু পরিবর্তন আনছে। জানা গেছে, পাঁচ বছর পর তারা আবার অ্যামাজনের সাথে তাদের পণ্য বিক্রির চুক্তি করতে যাচ্ছে।
একই সাথে, আগামী ১লা জুন থেকে কিছু পণ্যের দাম বাড়ানোরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। নতুন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (CEO) হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর, এলিওট হিল এই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপগুলো নিচ্ছেন, যা মূলত তাদের রাজস্বের ঘাটতি মেটানোর চেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
২০১৯ সালে নাইকি তাদের পণ্য অ্যামাজন থেকে সরিয়ে নেয় এবং নিজস্ব ওয়েবসাইট ও সীমিত কিছু তৃতীয় পক্ষের বিক্রেতাদের মাধ্যমে ব্যবসা পরিচালনা করতে শুরু করে। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তাদের বিক্রি কমে যাওয়ায়, বাজার প্রসারের জন্য তারা নতুন পথ খুঁজছে।
নাইকির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, “আমরা আমাদের বাজারের উন্নতি করছি, যাতে গ্রাহকদের জন্য সঠিক পণ্য, সেরা পরিষেবা এবং তাদের পছন্দের কেনাকাটার অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করা যায়।”
শুধু অ্যামাজনের সঙ্গেই নয়, নাইকি নতুন কিছু খুচরা বিক্রেতার সাথেও অংশীদারিত্ব করছে। এর মধ্যে রয়েছে ফ্রান্সের একটি বিখ্যাত ডিপার্টমেন্টাল স্টোর প্রিনটেম্পস, যারা সম্প্রতি নিউ ইয়র্কে তাদের প্রথম মার্কিন শাখা খুলেছে।
এছাড়া, তারা নতুন প্রজন্মের ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে আরবান আউটফিটার্সের সাথে মিলে একটি নতুন কনসেপ্ট স্টোর চালু করেছে, যেখানে নাইকির জুতা বিক্রি করা হবে।
দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্তের বিষয়ে, নাইকি জানিয়েছে, তারা নিয়মিতভাবে তাদের ব্যবসার মূল্যায়ন করে এবং মৌসুমী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে মূল্যে পরিবর্তন আনে।
তবে, তারা সরাসরিভাবে মার্কিন শুল্ক বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করেনি। জানা গেছে, কিছু পোশাক ও সরঞ্জামাদির দাম ১০ ডলার পর্যন্ত বাড়ানো হবে।
উদাহরণস্বরূপ, ১০০ থেকে ১৫০ ডলার দামের জুতার দাম ৫ ডলার এবং ১৫০ ডলারের বেশি দামের জুতার দাম ১০ ডলার পর্যন্ত বাড়তে পারে।
বাংলাদেশী টাকায় এর পরিমাণ আনুমানিক ৫০০ থেকে ১০০০ টাকার মতো হতে পারে (১ ডলার = ১১৭ টাকা ধরে)।
তবে, শিশুদের পোশাক ও জুতা, ১০০ ডলারের কম দামের পণ্য, এয়ার ফোর্স ১ জুতা এবং মাইকেল জর্ডান-ব্রান্ডের পোশাক ও সরঞ্জামগুলির দাম বাড়ানো হচ্ছে না।
বিভিন্ন প্রতিযোগী যেমন – অন, নিউ ব্যালেন্স এবং অ্যাডিডাসের সাথে তীব্র প্রতিযোগিতার কারণে নাইকির বিক্রি কমে গেছে। তাদের সর্বশেষ আয়ের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, বিশ্বব্যাপী তাদের বিক্রি ৯% কমেছে, যেখানে চীনে এই পতন ছিল ১৭%।
এই পরিস্থিতিতে, ক্লাসিক স্নিকার যেমন এয়ার ফোর্স ১ এবং পেগাসাসের সরবরাহ কমিয়ে চাহিদা বাড়ানোর চেষ্টা করছে নাইকি। এর মাধ্যমে তারা পুরো দামে জুতা বিক্রি করতে চাইছে।
সেই সাথে, তারা নতুন, উচ্চ মূল্যের এয়ার ম্যাক্স জুতা বিক্রি করতে চাইছে, যা দৌড়ানোর জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।
গত বছর, এলিওট হিলকে নাইকির নতুন সিইও হিসেবে নিয়োগ করা হয়। কিম কার্দাশিয়ানের ব্র্যান্ড স্কিমসের সাথে একটি নতুন সক্রিয় পোশাকের লাইন তৈরি করার চুক্তি তার উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপগুলোর মধ্যে অন্যতম, যা এই বসন্তে বাজারে আসার কথা ছিল।
শেয়ার বাজারেও নাইকির শেয়ারের দাম প্রায় ২০% কমেছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন