নিসানের কর্মী ছাঁটাই: বিশাল ধাক্কা! ২০,০০০ চাকরি যাওয়ার শঙ্কা!

আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন জাপানি গাড়ি প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান নিসান তাদের কর্মী ছাঁটাইয়ের সংখ্যা দ্বিগুণ করে প্রায় ২০,০০০ জনে নিয়ে আসার ঘোষণা দিয়েছে। মঙ্গলবার তারা জানিয়েছে, বিশ্বজুড়ে ব্যবসা পুনর্গঠনের অংশ হিসেবে এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

নিসানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, লোকসান কমাতে উৎপাদন কমানো হবে এবং কর্মী ছাঁটাইয়ের পাশাপাশি অন্যান্য খরচও কমানো হবে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নিসানের ব্যবসায়িক পারফর্ম্যান্সে বড় ধরনের অবনতি হয়েছে। গত অর্থবছরে তাদের মুনাফা প্রায় ৮৮ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৬৯.৮ বিলিয়ন ইয়েন (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৫৩২ কোটি টাকার মতো)।

এর আগে, কোম্পানিটি ৯,০০০ কর্মী ছাঁটাই করার ঘোষণা দিয়েছিল।

কোম্পানির নতুন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইভান এসপিনোসা এই পরিস্থিতিকে ‘উদ্বেগজনক’ বলে উল্লেখ করেছেন।

তিনি জানান, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে। প্রথম প্রান্তিকে নিসানের ২০০ বিলিয়ন ইয়েন (প্রায় ১ হাজার ৫২২ কোটি টাকার মতো) পরিচালন লোকসান হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

নিসানের এমন খারাপ অবস্থার পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে।

এর মধ্যে অন্যতম হলো, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনে তাদের গাড়ির বিক্রি কমে যাওয়া। এছাড়াও, প্রতিদ্বন্দ্বী হোন্ডার সঙ্গে তাদের একত্রীকরণের আলোচনা ভেস্তে যাওয়া এবং সাবেক চেয়ারম্যান কার্লোস ঘোসনের সময়ে বেশি বিক্রির উদ্দেশ্যে ডিসকাউন্ট দেওয়ার ফলে গাড়ির পুরনো মডেলগুলো বাজারে থেকে যাওয়ায়ও ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে তারা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিসান এখন মূলত পুরনো মডেলের গাড়িগুলোর আধুনিকীকরণ করতে হিমশিম খাচ্ছে।

এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক এবং চীনের বৈদ্যুতিক গাড়ির (ইভি) প্রস্তুতকারকদের সঙ্গে প্রতিযোগিতাও তাদের জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।

নিসান দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বাজার সহ বিভিন্ন স্থানে চীনা ইভি প্রস্তুতকারকদের সঙ্গে তীব্র প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হচ্ছে।

কোম্পানিটি ২০২৪ অর্থবছরের মধ্যে ৫০০ বিলিয়ন ইয়েন (প্রায় ৩ হাজার ৮০০ কোটি টাকার মতো) খরচ বাঁচানোর লক্ষ্য নিয়েছে।

এর অংশ হিসেবে তারা তাদের কারখানার সংখ্যা ১৭ থেকে কমিয়ে ১০-এ নামিয়ে আনবে এবং যন্ত্রাংশের জটিলতা ৭০ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে ফেলবে।

বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে, এই ধরনের ঘটনা বিশ্ব অর্থনীতির ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।

বিশেষ করে, বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য, যেখানে আমদানি ও প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের মাধ্যমে অর্থনীতির একটি বড় অংশ গঠিত হয়, সেখানে আন্তর্জাতিক বাজারের এই পরিবর্তনগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

তথ্য সূত্র: CNN

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *