চিকিৎসা বিজ্ঞানে ২০২৩ সালের নোবেল পুরস্কার জয় করলেন তিনজন বিজ্ঞানী। মানুষের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কিভাবে সঠিকভাবে কাজ করে, সেই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি আবিষ্কারের জন্য তাদের এই স্বীকৃতি।
এই তিনজন হলেন—মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মেরি ই ব্রুঙ্কো, ফ্রেড রামসডেল এবং জাপানের শিমোন সাকাগুচি।
সোমবার সুইডেনের স্টকহোমে নোবেল কমিটি এই পুরস্কার ঘোষণা করে। মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা বা ইমিউন সিস্টেম কিভাবে শরীরের ভেতরের কোষগুলোর উপর আক্রমণ করা থেকে নিজেকে বাঁচায়, সেই বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কারের জন্য তাদের এই পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে।
চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায়, এটিকে ‘পেরিফেরাল ইমিউন টলারেন্স’ বলা হয়।
নোবেল কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, এই বিজ্ঞানীদের গবেষণা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা কিভাবে কাজ করে, সে সম্পর্কে ধারণা দেয়। এর ফলে, কেন শরীরে মারাত্মক অটোইমিউন রোগ হয় না, সে বিষয়েও জানতে পারা যায়।
অটোইমিউন রোগ হলো এমন এক অবস্থা, যেখানে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নিজের কোষের বিরুদ্ধেই কাজ করতে শুরু করে।
জাপানি বিজ্ঞানী শিমোন সাকাগুচি ১৯৯৫ সালে টি-কোষের (T-cells) নতুন একটি ধরন আবিষ্কার করেন। তিনি দেখান যে, রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা আগে যা ধারণা করা হতো, তার চেয়ে অনেক বেশি জটিল।
পরবর্তীতে, ব্রুঙ্কো ও রামসডেল ২০০০ সালের দিকে গবেষণা করে দেখান, বিশেষ কিছু ইঁদুরের শরীরে কেন অটোইমিউন রোগ দেখা যায়। তারা আবিষ্কার করেন, ইঁদুরের ‘ফক্সপি3’ (Foxp3) নামক জিনে মিউটেশন হওয়ার কারণেই এমনটা ঘটে।
মানুষের শরীরেও এই জিনের মিউটেশন হলে মারাত্মক অটোইমিউন রোগ ‘আইপেক্স’ (IPEX) হতে পারে।
২০০৩ সালে সাকাগুচি তার আগের আবিষ্কারের সঙ্গে ব্রুঙ্কো ও রামসডেলের এই গবেষণা যুক্ত করেন। তিনি প্রমাণ করেন, ‘ফক্সপি3’ জিন ‘রেগুলেটরি টি-সেল’ তৈরিতে সহায়তা করে।
এই আবিষ্কারের ফলে ক্যান্সার এবং অটোইমিউন রোগের চিকিৎসায় নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে।
এই বিজ্ঞানীদের গবেষণা ‘পেরিফেরাল টলারেন্স’-এর উপর ভিত্তি করে হয়েছে। এর মাধ্যমে ক্যান্সার এবং অটোইমিউন রোগের চিকিৎসায় নতুন পথ খুলেছে।
নিঃসন্দেহে, এই আবিষ্কার চিকিৎসা বিজ্ঞানকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন