২০২৫ সালের সেরা ভ্রমণ: রাতের অন্ধকারে নতুন অভিজ্ঞতা!

রাতের আঁধারে ভ্রমণের এক নতুন দিগন্ত: ‘নকটো্যুরিজম’ -এর জয়জয়কার

ভ্রমণ ভালোবাসেন এমন মানুষের কাছে এখন ‘নকটো্যুরিজম’ বা রাতের বেলায় ভ্রমণের ধারণাটি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। সারা বিশ্বজুড়ে রাতের বেলা প্রকৃতির কাছাকাছি যাওয়া এবং বিভিন্ন অভিজ্ঞতা লাভের প্রবণতা বাড়ছে। রাতের আকাশ দেখা, রাতের বেলা বন্যপ্রাণী দেখা, অথবা রাতের বেলায় ঐতিহাসিক স্থান ভ্রমণ – এই সবকিছুই এখন ভ্রমণকারীদের কাছে নতুন আকর্ষণ।

যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনায় অবস্থিত ‘নাইট স্কাই ট্যুরিস্ট’ নামক একটি সংস্থা রাতের আকাশে তারা দেখার ভ্রমণের আয়োজন করে থাকে। তাদের মতে, রাতের বেলা প্রকৃতির মাঝে কাটানো সময় মানুষের অনুভূতিকে আরও বেশি সজাগ করে তোলে। শুধু তারা দেখাই নয়, সারা বিশ্বে ‘ডার্ক স্কাই ইন্টারন্যাশনাল’ নামক একটি সংস্থা রয়েছে যারা রাতের আকাশ পর্যবেক্ষণের জন্য উপযুক্ত স্থানগুলোকে চিহ্নিত করে।

ইতোমধ্যে তারা বিশ্বের ২০০টিরও বেশি স্থানকে এই স্বীকৃতি দিয়েছে।

আরেকটি উদাহরণ হলো, যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনার টুসনে ১১টি স্থান নিয়ে গঠিত ‘অ্যাস্ট্রো ট্রেইল’। এখানে রয়েছে একটি অত্যাধুনিক টেলিস্কোপ এবং সুন্দর সাগুয়ারো ন্যাশনাল পার্ক, যা রাতের আকাশ পর্যবেক্ষণের জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া, ফিনিক্স শহরে তৈরি হচ্ছে ‘ইন্টারন্যাশনাল ডার্ক স্কাই ডিসকভারি সেন্টার’।

এটি একটি বিশাল স্থান, যেখানে রাতের আকাশ পর্যবেক্ষণের বিভিন্ন ব্যবস্থা থাকবে।

শুধু তাই নয়, উত্তর মেরুর কাছাকাছি অঞ্চলে রাতের আকাশেও ভ্রমণকারীদের আনাগোনা বাড়ছে। কানাডার ইউকন টেরিটরিতে ‘অরোরা’ বা উত্তর মেরুর আলো দেখার জন্য পর্যটকদের ভিড় লেগে যায়। সেখানকার স্থানীয় সংস্থাগুলো রাতের বেলা বরফ-শিকারের মতো ভ্রমণেরও আয়োজন করে।

এছাড়াও, নরওয়ের একটি হোটেলে বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে, যেখানে বসে পর্যটকেরা অরোরা উপভোগ করতে পারেন।

সূর্যগ্রহণের মতো মহাজাগতিক ঘটনাগুলোও পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় গন্তব্য হয়ে উঠছে। ২০২৬ সালে স্পেনে এবং ২০২৭ সালে মিশরে এই দৃশ্য দেখা যাবে।

এছাড়া, অস্ট্রেলিয়ার সাউদার্ন ওশান লজে রাতের বেলা কোয়ালা, ইঁদুর এবং ওয়ালাবি দেখার সুযোগ রয়েছে।

এই ধরনের নকটো্যুরিজমের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির বেশ কিছু কারণ রয়েছে। দিনের বেলায় অনেক পর্যটকের আনাগোনা থাকে, তাই রাতের বেলা ভ্রমণ করলে ভিড় এড়িয়ে যাওয়া যায়। গরমের সময়ে রাতের বেলা ভ্রমণ করলে আবহাওয়া অপেক্ষাকৃত শীতল থাকে।

এছাড়াও, রাতের বেলায় বিভিন্ন বিনোদনমূলক কার্যক্রম, যেমন – তারা দেখা, রাতের খাবার বা বিশেষ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের সুযোগ থাকে।

পর্যটকদের এই নতুন ধরনের আগ্রহের কারণে, ভ্রমণ সংস্থাগুলোও তাদের পরিকল্পনা সাজাচ্ছে। তারা এখন রাতের বেলা ভ্রমণের জন্য আকর্ষণীয় সব প্রস্তাব নিয়ে আসছে। এটি ভ্রমণকারীদের জন্য এক নতুন অভিজ্ঞতা যোগ করছে।

বর্তমানে, যারা রাতে ভ্রমণ করতে চান, তাদের জন্য বিভিন্ন ধরণের বিকল্প উপলব্ধ। আপনি যদি রাতের বেলা নতুন কিছু করতে চান, তবে নকটো্যুরিজম আপনার জন্য একটি দারুণ বিকল্প হতে পারে।

তথ্য সূত্র: ট্রাভেল অ্যান্ড লেজার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *