যুক্তরাজ্যের অভিনেতা নোয়েল ক্লার্কের বিরুদ্ধে আনা যৌন অসদাচরণের অভিযোগ নিয়ে প্রকাশিত সংবাদ প্রকাশের জেরে, খ্যাতিমান দৈনিক ‘দ্য গার্ডিয়ান’-এর বিরুদ্ধে করা মানহানির মামলার শুনানি চলছে। লন্ডনের একটি আদালতে এই মামলার শুনানিতে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে আসছে।
ক্লার্কের করা এই মামলার প্রধান কারণ ছিল, গার্ডিয়ান পত্রিকায় প্রকাশিত কিছু নিবন্ধ ও একটি পডকাস্ট, যেখানে তার বিরুদ্ধে যৌন অসদাচরণের অভিযোগ আনা হয়েছিল।
মামলার শুনানিতে, গার্ডিয়ান পত্রিকার প্রধান সম্পাদক ক্যাথারিন ভিনার জানিয়েছেন, ক্লার্কের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো জনস্বার্থে প্রকাশ করা অত্যন্ত জরুরি ছিল। কারণ, ক্লার্ককে ব্রিটিশ একাডেমি ফিল্ম অ্যাওয়ার্ডস (বাফটা) কর্তৃক বিশেষ সম্মান জানানো হয়েছিল, যা পরবর্তীতে স্থগিত করা হয়।
ভিনারের মতে, ক্লার্ককে এই স্বীকৃতি দেয়ার ফলে, তার বিরুদ্ধে আসা অভিযোগগুলোর গুরুত্ব বিবেচনা করা অপরিহার্য ছিল। তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, ক্লার্কের বিরুদ্ধে আসা অভিযোগগুলো যেন যুক্তরাজ্যের চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন জগতে ‘আলোচিত বিষয়’ ছিল।
আদালতে দেওয়া সাক্ষ্যে, গার্ডিয়ান-এর ডেপুটি এডিটর ওয়েন গিবসন জানান, ক্লার্ক ও তার সহযোগী জেসন মাজার সাক্ষীদের সঙ্গে যোগাযোগ করছিলেন। তাদের এই কাজটি সাক্ষীদের ভয় দেখানোর কারণ হতে পারে, এমন আশঙ্কা থেকে গার্ডিয়ান পত্রিকা প্রথম নিবন্ধ প্রকাশের সময় বিবেচনা করেছিল।
মামলার শুনানিতে সাক্ষী হিসেবে জার্মান চলচ্চিত্র পরিচালক আনা কাইজার তার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। তিনি জানান, ২০০৮ সালে ‘ডগহাউস’ নামক চলচ্চিত্রে ক্লার্কের সঙ্গে কাজ করার সময় তিনি কিছু আপত্তিকর ঘটনার সম্মুখীন হয়েছিলেন।
কাইজারের ভাষ্যমতে, ক্লার্ক প্রায়ই তাকে জড়িয়ে ধরতেন এবং ঠোঁটে চুমু খাওয়ার চেষ্টা করতেন। কাইজার জানান, তিনি প্রতিবারই নিজেকে সরিয়ে নিতেন।
অন্যদিকে, ক্লার্কের আইনজীবী ফিলিপ উইলিয়ামস, ক্যাথারিন ভিনারের কাছে গার্ডিয়ান পত্রিকার খবর প্রকাশের ভূমিকা সম্পর্কে জানতে চান। জবাবে ভিনার জানান, তিনি সাংবাদিকদের কাছ থেকে রিপোর্টিং এবং সম্পাদকের সম্পাদনার পরেই বিষয়গুলি সম্পর্কে অবগত হন।
বর্তমানে, এই মামলার চূড়ান্ত যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের প্রস্তুতি চলছে। আদালতের রায়ের দিকে তাকিয়ে আছেন সংশ্লিষ্ট সকলে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান