৬০০ মিলিয়ন ডলারের ক্ষতিপূরণ: ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনার দায় কার?

যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও-পেনসিলভানিয়ার সীমান্তবর্তী অঞ্চলে ২০২৩ সালে ঘটে যাওয়া একটি ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রায় ৬০০ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা) প্রদানের দায়িত্ব কার, তা নির্ধারণের জন্য একটি মামলার শুনানি শুরু হয়েছে। এই ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে স্থানীয় পরিবেশ, যার ফলশ্রুতিতে এলাকার বাসিন্দাদের স্বাস্থ্য নিয়েও দেখা দিয়েছে উদ্বেগ।

ঘটনার সূত্রপাত হয় ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে, যখন নরফোক সাউদার্ন রেলওয়ের একটি মালবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত হয়। ট্রেনের বগিগুলোতে থাকা বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থের মধ্যে ছিল ভিনাইল ক্লোরাইড, যা দুর্ঘটনার পর নির্গত হয়ে আশেপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে।

এরপর, কর্মকর্তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, পাঁচটি ট্যাংকার থেকে ভিনাইল ক্লোরাইড পুড়িয়ে ফেলার ফলে পুরো এলাকা ধোঁয়ায় ঢেকে যায় এবং বাসিন্দাদের সরিয়ে নিতে হয়।

ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ প্রদানের জন্য একটি ক্লাস-অ্যাকশন সেটেলমেন্টের (ক্ষতিপূরণ চুক্তি) অংশ হিসেবে এই ৬০০ মিলিয়ন ডলারের বিষয়টি নির্ধারিত হয়েছে। এখন প্রশ্ন উঠেছে, এই বিশাল অঙ্কের টাকা দেবে কে?

নরফোক সাউদার্ন রেলওয়ে চাইছে, এই খরচের ভাগীদার হোক রেলের বগি সরবরাহকারী জিএটিএক্স (GATX) এবং রাসায়নিক প্রস্তুতকারক কোম্পানি অক্সিভিনাইলস (OxyVinyls)। তাদের দাবি, দুর্ঘটনার জন্য এই দুই সংস্থাই পরোক্ষভাবে দায়ী।

অন্যদিকে, জিএটিএক্স এবং অক্সিভিনাইলস উভয়ই নরফোক সাউদার্নের এই যুক্তির বিরোধিতা করছে। তাদের বক্তব্য, দুর্ঘটনার জন্য রেলওয়ের নিরাপত্তা বিধানে গাফিলতিই মূল কারণ। তাদের মতে, ট্রেনের রক্ষণাবেক্ষণ এবং সুরক্ষার দায়িত্ব ছিল নরফোক সাউদার্নের।

এই মামলার শুনানিতে মূলত নির্ধারিত হবে, ক্ষতিপূরণের এই বিশাল অঙ্কের টাকা কোন কোম্পানি দেবে। স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষতিপূরণের জন্য অপেক্ষায় রয়েছেন, তবে এই মামলার রায় তাদের প্রাপ্য অর্থের পরিমাণে কোনো প্রভাব ফেলবে না।

মামলার শুনানিতে উভয় পক্ষের যুক্তি-পাল্টা যুক্তিতে এটা স্পষ্ট যে, দুর্ঘটনার কারণ এবং দায়বদ্ধতা নিয়ে এখনো বিতর্ক চলছে।

আদালতে এই মামলার শুনানি সম্ভবত দুই থেকে তিন সপ্তাহ পর্যন্ত চলতে পারে।

তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *