নৌভ্রমণে যাওয়া যাত্রীদের জন্য দুঃসংবাদ! বিলাসবহুল ‘কুইন মেরী ২’ জাহাজে মারাত্মক নরোভাইরাস, আক্রান্ত দুই শতাধিক।
যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (সিডিসি)-এর তথ্য অনুযায়ী, বিলাসবহুল ক্রুজ জাহাজ ‘কুইন মেরী ২’-এ ভয়াবহ নরোভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। এর ফলে জাহাজে থাকা দুই শতাধিক যাত্রী ও ক্রু সদস্য অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
এই ভাইরাসের সংক্রমণে ডায়রিয়া ও বমি হওয়ার মতো উপসর্গ দেখা দিচ্ছে।
জানা গেছে, ‘কুইন মেরী ২’ আটই মার্চ ইংল্যান্ডের সাউদাম্পটন বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করে এবং ৬ই এপ্রিল ফেরার কথা ছিল। সিডিসি’র হিসাব অনুযায়ী, এই সমুদ্রযাত্রায় ২,৫৩৮ জন যাত্রীর মধ্যে ২২৪ জন এবং ১,২৩২ জন ক্রু সদস্যের মধ্যে ১৭ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
নরোভাইরাস কি?
নরোভাইরাস একটি অতি সংক্রামক ভাইরাস, যা খুব সহজেই একজনের শরীর থেকে অন্যে ছড়াতে পারে। এটি সাধারণত গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ইনফেকশন বা পেটের সমস্যা সৃষ্টি করে।
এর প্রধান লক্ষণগুলো হলো বমি ও ডায়রিয়া। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ভাইরাস দ্রুত ছড়ানোর কারণে ক্রুজ জাহাজের মতো আবদ্ধ স্থানে এটি দ্রুত বিস্তার লাভ করে।
ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা
ভাইরাসের বিস্তার রোধে ক্রুজ সংস্থা ‘কুনার্ড’ আক্রান্ত যাত্রী ও ক্রু সদস্যদের আলাদা করে ফেলেছে এবং জাহাজে পরিচ্ছন্নতা ও জীবাণুনাশক ব্যবহারের পরিমাণ বাড়িয়েছে। সিডিসি পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং জাহাজের স্বাস্থ্যবিধি খতিয়ে দেখছে।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ
সংক্রমণ থেকে বাঁচতে ভ্রমণের সময় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা অত্যন্ত জরুরি। সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা এড়িয়ে চলা, সাবান ও জল দিয়ে ভালোভাবে হাত ধোয়া, এবং অসুস্থ বোধ করলে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়ার মতো বিষয়গুলোর ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।
ক্রুজ জাহাজে কেন এমন ঘটনা ঘটে?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ক্রুজ জাহাজে একই স্থানে অনেক মানুষ একসঙ্গে ভ্রমণ করে, যার ফলে সহজেই রোগ ছড়ানোর সম্ভাবনা থাকে। তাছাড়া, জাহাজের আবদ্ধ পরিবেশে ভাইরাস দ্রুত বিস্তার লাভ করে।
এই ধরনের ঘটনা থেকে শিক্ষা
এই ঘটনা ভ্রমণকালে স্বাস্থ্যবিধি ও সুরক্ষার গুরুত্বের কথা মনে করিয়ে দেয়। বিশেষ করে, বর্ষাকালে বা জনবহুল স্থানে ভ্রমণের সময় এই বিষয়ে আরও সতর্ক থাকা উচিত।
বর্তমানে, সিডিসি-এর তথ্যমতে, চলতি বছর এখন পর্যন্ত ১১টি ক্রুজ জাহাজে গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল অসুস্থতার প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে, যার মধ্যে ৯টির কারণ নরোভাইরাস।
তথ্যসূত্র: সিএনএন