শিরোনাম: ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার অস্ত্র সরবরাহ: উত্তর কোরিয়ার ভূমিকা বাড়ছে
গত কয়েক মাস ধরে ইউক্রেন যুদ্ধ নতুন মোড় নিয়েছে, যেখানে রাশিয়ার সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে উত্তর কোরিয়ার সক্রিয় সমর্থন বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। কিয়েভে সম্প্রতি চালানো ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় উত্তর কোরিয়ার তৈরি ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এই বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই রাশিয়াকে অস্ত্র ও গোলাবারুদ দিয়ে সাহায্য করছে উত্তর কোরিয়া। পশ্চিমা দেশগুলোর গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মতে, উত্তর কোরিয়া থেকে রাশিয়ায় নিয়মিতভাবে আর্টিলারি শেল, রকেট লঞ্চার এবং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করা হচ্ছে। স্যাটেলাইট চিত্র এবং অন্যান্য সূত্র থেকে জানা যায়, গত কয়েক মাসে কয়েক মিলিয়ন আর্টিলারি শেল ও রকেট রাশিয়ায় পাঠানো হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উত্তর কোরিয়ার এই সামরিক সহায়তা রাশিয়ার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে গোলাবারুদের ক্ষেত্রে, রাশিয়ার আর্টিলারি ইউনিটের ৭০ শতাংশ পর্যন্ত সরবরাহ আসছে উত্তর কোরিয়া থেকে। জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞ সত্ত্বেও, উত্তর কোরিয়া এই সহায়তা অব্যাহত রেখেছে।
সামরিক বিশ্লেষকদের মতে, উত্তর কোরিয়া শুধু পুরনো অস্ত্রশস্ত্রই সরবরাহ করছে না, বরং তারা অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্রও পাঠাচ্ছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো KN-23 এবং KN-24 ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। কিয়েভে চালানো সাম্প্রতিক হামলায় এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়া, Hwasong-11 সিরিজের ক্ষেপণাস্ত্রও সরবরাহ করা হয়েছে, যা রাশিয়ার সামরিক সক্ষমতা বাড়াচ্ছে।
এই অস্ত্র সরবরাহের বিনিময়ে রাশিয়া উত্তর কোরিয়াকে সামরিক প্রযুক্তি এবং অন্যান্য সহায়তা দিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। উত্তর কোরিয়া সম্ভবত তাদের সামরিক সক্ষমতা আরও বাড়াতে চাইছে, যার অংশ হিসেবে এই সহযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ।
বিশেষজ্ঞদের মতে, উত্তর কোরিয়ার এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা পরিস্থিতির ওপর গভীর প্রভাব ফেলছে। বিশেষ করে, কোরিয়া উপদ্বীপ এবং তার আশেপাশে উত্তেজনা আরও বাড়তে পারে। রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যেকার এই সামরিক সহযোগিতা ভবিষ্যতে আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হলে, উত্তর কোরিয়া সম্ভবত আরও উন্নতমানের অস্ত্র সরবরাহ করতে পারে। এর মধ্যে অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক গাইডেড মিসাইল, সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল এবং মাঝারি পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান