যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে রাশিয়ার প্রতি সমর্থন অব্যাহত রেখেছে উত্তর কোরিয়া। সম্প্রতি দেশটি আরও প্রায় ৩ হাজার সেনা সদস্যকে রাশিয়ায় পাঠিয়েছে বলে জানিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী। খবরটি এমন এক সময়ে পাওয়া গেল, যখন ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের জন্য বিশ্বনেতাদের মধ্যে আলোচনা চলছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার জয়েন্ট চিফস অফ স্টাফের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে এই অতিরিক্ত সেনা পাঠানো হয়েছে। এর আগে, রাশিয়াকে সহায়তার জন্য উত্তর কোরিয়া প্রায় ১১ হাজার সেনা পাঠিয়েছিল। এর মধ্যে প্রায় ৪ হাজার সেনা হয় নিহত হয়েছেন, নয়তো আহত হয়েছেন।
শুধু সেনা পাঠানোই নয়, উত্তর কোরিয়া রাশিয়াকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে সামরিক সরঞ্জামও সরবরাহ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে স্বল্প পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, ১৭০ মিলিমিটারের সেলফ-প্রপেলড হাউitzer এবং ২৪০ মিলিমিটার মাল্টিপল রকেট লঞ্চার। দক্ষিণ কোরিয়া আরও জানিয়েছে, পরিস্থিতি অনুযায়ী উত্তর কোরিয়ার সহায়তা ভবিষ্যতে আরও বাড়তে পারে।
অন্যদিকে, রাশিয়াও উত্তর কোরিয়াকে সমর্থন যুগিয়ে যাচ্ছে। রাশিয়া থেকে উত্তর কোরিয়া কয়লা, খাদ্য ও ঔষধসহ বিভিন্ন ধরনের সহায়তা পাচ্ছে। এমনকি, ইউক্রেন যুদ্ধে নিহত রুশ সেনাদের সন্তানদের উত্তর কোরিয়ায় অবকাশ যাপনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া, দুই দেশের মধ্যে ছাত্র বিনিময় কর্মসূচিও চালু হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে এই গভীর সম্পর্ক প্রযুক্তি হস্তান্তরে সহায়তা করতে পারে। বিশেষ করে, উত্তর কোরিয়াকে অত্যাধুনিক সামরিক প্রযুক্তি সরবরাহ করার সম্ভাবনা রয়েছে, যা উদ্বেগের কারণ। সম্প্রতি উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন একটি নতুন এআই-চালিত ড্রোন পরীক্ষার তদারকি করেছেন। এছাড়া, দেশটি একটি নতুন গোয়েন্দা ড্রোনও উন্মোচন করেছে, যার কিছু অংশ রাশিয়া থেকে আসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
যুদ্ধ বন্ধের জন্য বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা চললেও, ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে সংঘর্ষ এখনও অব্যাহত রয়েছে। সম্প্রতি ইউক্রেনের খারকিভ শহরে রাশিয়ার ড্রোন হামলায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এই হামলার তীব্র নিন্দা করেছেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতে, রাশিয়া সম্ভবত ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করতে চাইছে, তবে তারা বিষয়টি ধীরে ধীরে করছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন