মেসিডোনিয়ায় নাইটক্লাব আগুনে নিহতদের স্মরণে বিক্ষোভ, দুর্নীতিতে ফুঁসছে জনতা!

উত্তর মেসিডোনিয়ার একটি নাইটক্লাবে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫৯ জনে দাঁড়িয়েছে। এই ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে পুরো দেশে, আর এর জের ধরে হাজার হাজার মানুষ দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে এসেছে।

কোকানি শহরে, যেখানে ক্লাবটি অবস্থিত, সেখানে বিক্ষোভকারীরা নিহতদের জন্য ন্যায়বিচার চেয়েছেন এবং এই ট্র্যাজেডির জন্য দায়ী দুর্নীতির অবসান দাবি করেছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ক্লাবটিতে আগুন লাগার কারণ ছিল আতশবাজি। রবিবার রাতের ওই অগ্নিকাণ্ডে আহত হয়েছেন দেড়শ’র বেশি মানুষ, যাদের মধ্যে গুরুতর আহতদের গ্রিস, তুরস্ক, সার্বিয়া ও বুলগেরিয়ায় চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।

নিহতদের বেশিরভাগই ছিলেন তরুণ-তরুণী, যারা একটি জনপ্রিয় হিপ-হপ দলের কনসার্ট উপভোগ করতে এসেছিলেন। জানা গেছে, নিহতদের মধ্যে ২০ জনের বেশি এবং আহতদের মধ্যে তিনজন ছিলেন ১৮ বছরের কম বয়সী।

ঘটনার তদন্তে জানা গেছে, ক্লাবটি কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ঘুষের বিনিময়ে অবৈধভাবে লাইসেন্স নিয়ে চলছিল। ক্লাবটিতে আগুন নেভানোর পর্যাপ্ত ব্যবস্থা ছিল না, এমনকি জরুরি নির্গমনের পথও ছিল খুবই দুর্বল।

অগ্নিকাণ্ডের সময় ক্লাবের ধারণক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি লোক ছিল।

উত্তর মেসিডোনিয়ার প্রধানমন্ত্রী হ্রিস্টিজান মিকোস্কি এই ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করে বলেছেন, যারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তাদের কোনো ক্ষমা করা হবে না। তিনি আরও জানিয়েছেন, নাইটক্লাবটির লাইসেন্স প্রক্রিয়াতেও দুর্নীতি হয়েছে।

দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, এই অগ্নিকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে, যাদের মধ্যে একজন সাবেক অর্থমন্ত্রীও রয়েছেন।

এই ঘটনার প্রতিবাদে রাজধানী স্কোপজে’র বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা নীরব প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছেন এবং আগামী দিনগুলোতেও এই কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

এছাড়া, বিভিন্ন শহরেও প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে, যেখানে দুর্নীতি বন্ধের দাবিতে সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। সরকার নিহতদের প্রতি সম্মান জানিয়ে সাত দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে।

তথ্য সূত্র:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *