জোকোভিচের খেলায় ভাঙন? মিয়ামি ওপেনে তরুণ খেলোয়াড়ের কাছে হার!

নোভাক জোকোভিচ, টেনিস বিশ্বের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র, যিনি দীর্ঘদিন ধরে পুরুষদের টেনিসে রাজত্ব করেছেন। কিন্তু সম্প্রতি, তাঁর খেলায় যেন কিছুটা ভাটা পড়েছে।

মিয়ামি ওপেনে ১৯ বছর বয়সী চেক তরুণ ইয়াকুব মেনসিকের কাছে হারের পর তাঁর সেই দুর্বলতা আরও স্পষ্ট হয়েছে। খেলার স্কোর ছিল ৭-৬(৪), ৭-৬(৪)।

এই পরাজয় শুধু একটি খেলাই ছিল না, বরং টেনিস বিশ্বে একটি নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে।

মিয়ামি ওপেনের ফাইনালে মেনসিকের অসাধারণ পারফরম্যান্স ছিল চোখে পড়ার মতো। তাঁর শক্তিশালী সার্ভ এবং নির্ভীক আক্রমণাত্মক খেলার সামনে জোকোভিচকে বেশ অসহায় লেগেছে।

মেনসিকের এই সাফল্যের পেছনে রয়েছে তাঁর কঠোর অনুশীলন এবং প্রতিভার প্রমাণ। এই টুর্নামেন্টে তিনি শীর্ষ আটজন খেলোয়াড়ের মধ্যে তিনজন, জ্যাক ড্র্যাপার, টেলর ফ্রিজ এবং স্বয়ং জোকোভিচকে হারিয়েছেন, যা তাঁর ভবিষ্যৎ গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের সম্ভাবনাকে আরও উজ্জ্বল করেছে।

অন্যদিকে, জোকোভিচের জন্য এই পরাজয় সম্ভবত আরও কঠিন ছিল। খেলার আগে তাঁর শারীরিক অবস্থা খুব একটা ভালো ছিল না।

বৃষ্টির কারণে খেলা দেরিতে শুরু হওয়ার আগে তাঁর চোখে ফোলাভাব দেখা যায়। খেলার মাঝেও তিনি চোখের সমস্যার জন্য ড্রপ ব্যবহার করেছেন। এই শারীরিক দুর্বলতা সম্ভবত তাঁর খেলায় প্রভাব ফেলেছিল।

এই পরাজয়ের পর জোকোভিচের ফর্ম নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাঁর খেলা আগের মতো নেই।

টেনিসের ইতিহাসে দেখা যায়, অনেক কিংবদন্তি খেলোয়াড়ই একটা বয়সের পর তাঁদের সেরাটা দিতে পারেন না। রজার ফেদেরার এবং রাফায়েল নাদাল তাঁদের শেষ গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতেছেন ৩৬ বছর বয়সে।

সেরেনা উইলিয়ামসও ৩৫ বছর বয়সে শেষ মেজর জিতেছেন।

জোকোভিচ বর্তমানে ৩৭ বছর বয়সী এবং তাঁর পক্ষে শীর্ষ স্থান ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়ছে। যদিও তিনি এখনও ভালো খেলছেন, কিন্তু তাঁর নিজের উচ্চ মান বজায় রাখা ক্রমশ কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

তাঁর সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছে। গত বছর অলিম্পিক গেমসে জয় ছাড়া, ২০২৩ সালের এটিপি ফাইনালের পর থেকে তিনি কোনো টুর্নামেন্ট জিততে পারেননি।

টেনিস বিশ্বে এখন পরিবর্তনের হাওয়া লেগেছে। শীর্ষ খেলোয়াড়রা, যেমন কার্লোস আলকারাজ, আলেকজান্ডার জেভেরেভ, দানিল মেদভেদেভ, টেলর ফ্রিজ এবং আন্দ্রে রুবেলভ বিভিন্ন কারণে ভালো খেলতে পারছেন না।

তবে, ইয়ানিক সিনার এখনো এটিপি র‍্যাঙ্কিংয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছেন।

আসন্ন মন্টি কার্লো মাস্টার্স টুর্নামেন্ট শুরু হতে যাচ্ছে, যেখানে জোকোভিচকে আরও কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে। টেনিসের শীর্ষস্থান ধরে রাখতে হলে, তাঁকে নতুন করে ঘুরে দাঁড়াতে হবে।

নিঃসন্দেহে, এই চ্যালেঞ্জ তাঁর জন্য একটি সুযোগও বটে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *