মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, ন্যাশনাল পাবলিক রেডিও (NPR)-সহ বেশ কয়েকটি স্থানীয় রেডিও স্টেশন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সরকারের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছে। তাদের অভিযোগ, ট্রাম্প প্রশাসন কর্তৃক জারি করা একটি নির্বাহী আদেশ রেডিও স্টেশনগুলোর সরকারি অর্থায়ন বন্ধ করার চেষ্টা করছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের প্রথম সংশোধনী লঙ্ঘন করে।
মামলার মূল বক্তব্য হলো, ট্রাম্প প্রশাসন এনপিআর-এর সংবাদ পরিবেশনের স্বাধীনতাকে খর্ব করতে চাইছে। তারা মনে করে, এই আদেশের মাধ্যমে সংবাদ মাধ্যমের কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। সংবিধানের প্রথম সংশোধনী বাকস্বাধীনতা নিশ্চিত করে, যা সরকারের এমন কোনো পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেয়।
মামলার বিবরণে বলা হয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসন এনপিআর-এর সংবাদ পরিবেশনে “পক্ষপাতিত্ব” দেখিয়েছিল এবং এর প্রতিক্রিয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, তারা একটি নির্দিষ্ট খবর প্রচার না করা বা কিছু বিশেষ বিষয়বস্তু পরিবেশন করার অভিযোগ এনেছে। এনপিআর-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ক্যাথরিন মাহের এই পদক্ষেপকে “প্রতিশোধমূলক” এবং “দৃষ্টিভঙ্গিনির্ভর বৈষম্য” হিসেবে অভিহিত করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের পাবলিক ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশন (সিপিবি) প্রতি বছর প্রায় ৫০০ মিলিয়ন ডলার খরচ করে পাবলিক টিভি ও রেডিওর জন্য। এর মধ্যে, পিবিএস (PBS) এবং এনপিআর ফেডারেল অনুদান থেকে তাদের তহবিলের একটি অংশ পায়। পিবিএস ফেডারেল অনুদান থেকে ১৭ শতাংশ এবং এনপিআর ২ শতাংশ অর্থ পেয়ে থাকে। ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের ফলে এই অর্থায়নেও প্রভাব পড়তে পারে।
আদালতে দায়ের করা আবেদনে আরও বলা হয়েছে যে, নির্বাহী আদেশের মূল উদ্দেশ্য হলো এনপিআর-কে তাদের সংবাদ পরিবেশনার ধারা পরিবর্তন করতে বাধ্য করা, যা সংবিধানের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এর মাধ্যমে গণমাধ্যম কর্তৃপক্ষের স্বাধীনতা এবং সম্পাদকীয় অধিকারের ওপর হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ট্রাম্প প্রশাসনের সময় গণমাধ্যম এবং সরকারের মধ্যে বেশ কয়েকবার মতবিরোধ দেখা গেছে। এর আগে, সরকারের পক্ষ থেকে ভয়েস অফ আমেরিকা এবং রেডিও ফ্রি ইউরোপ/রেডিও লিবার্টির মতো সরকারি অর্থে পরিচালিত সংবাদ মাধ্যমের কার্যক্রম সীমিত করারও চেষ্টা করা হয়েছিল।
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং সরকারি হস্তক্ষেপের এই বিষয়টি বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একটি গণতান্ত্রিক সমাজে মুক্ত ও স্বাধীন গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা