যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি নির্বাহী আদেশের বিরুদ্ধে দেশটির ন্যাশনাল পাবলিক রেডিও (এনপিআর) ও এর কয়েকটি স্থানীয় বেতার কেন্দ্র আদালতে মামলা করেছে। খবর অনুযায়ী, ওই আদেশে সরকারি অর্থায়নে চলা এনপিআর এবং পাবলিক ব্রডকাস্টিং সার্ভিস (পিবিএস)-এর জন্য বরাদ্দ বন্ধ করার কথা বলা হয়েছিল।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের প্রথম সংশোধনীকে লঙ্ঘন করে, যা মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করে। এনপিআর-এর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, তাদের সংবাদ পরিবেশনার কারণে ট্রাম্প ক্ষুব্ধ হয়ে এই পদক্ষেপ নিয়েছেন।
আদালতের নথি অনুযায়ী, কলোরাডো পাবলিক রেডিও, অ্যাস্পেন পাবলিক রেডিও এবং কিউটি ইনকর্পোরেটেড-এর মতো স্থানীয় স্টেশনগুলোও এই মামলায় জড়িত রয়েছে।
আদালতে দায়ের করা আবেদনে বলা হয়, ট্রাম্পের এই নির্বাহী আদেশের মূল উদ্দেশ্য হলো, এনপিআর-কে তাদের সংবাদ ও অন্যান্য অনুষ্ঠানে এমন বিষয় পরিবেশন করার জন্য শাস্তি দেওয়া, যা সাবেক রাষ্ট্রপতির পছন্দ ছিল না। এর মাধ্যমে এনপিআর এবং অন্যান্য পাবলিক রেডিও স্টেশনগুলোর স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের অধিকার খর্ব করার চেষ্টা করা হয়েছে।
আইনজীবীরা বলছেন, এই ধরনের পদক্ষেপ প্রতিশোধমূলক এবং এটি সংবিধানের সরাসরি লঙ্ঘন।
জানা গেছে, পিবিএস এখনো আলাদাভাবে কোনো মামলা করেনি, তবে তাদেরও একই পথে হাঁটার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ, এনপিআর ও পিবিএস উভয়েই ট্রাম্পের এই পদক্ষেপকে অবৈধ বলে মনে করে।
এদিকে, ট্রাম্প প্রশাসনের আমলে সরকারি অর্থায়নে চলা অন্যান্য সংবাদ মাধ্যম, যেমন ভয়েস অফ আমেরিকা এবং রেডিও ফ্রি ইউরোপ/রেডিও লিবার্টির সঙ্গেও বিভিন্ন সময়ে বিরোধ দেখা গেছে। এছাড়া, সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে মতাদর্শগত ভিন্নতার কারণে দেশটির প্রভাবশালী গণমাধ্যমগুলোর সঙ্গেও ট্রাম্প প্রশাসনের সম্পর্ক ভালো ছিল না।
ফেডারেল কমিউনিকেশনস কমিশন এবিসি, সিবিএস ও এনবিসি নিউজের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছিল। এমনকি, একটি ঘটনার জেরে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকেও আদালতের দ্বারস্থ হতে হয়েছিল।
সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা এবং সরকারের হস্তক্ষেপ নিয়ে বিতর্ক বিশ্বজুড়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বাংলাদেশেও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং অবাধ তথ্য প্রবাহের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস।