পোপ ফ্রান্সিসের প্রয়াণে আবেগাপ্লুত হয়ে শোক প্রকাশ করে বিশ্বজুড়ে আলোচনায় আসা সিস্টার জেনভিভ জেনিঅ্যাঁগরো। যিনি ভ্যাটিকানের প্রথা ভেঙে প্রয়াত পোপের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গিয়েছিলেন, তিনি জানিয়েছেন পোপ ফ্রান্সিস ছিলেন তাঁর কাছে ‘ভাই’, ‘বন্ধু’।
খবরটি এখন বিশ্বজুড়ে মানুষের কাছে আলোচনার বিষয়। সিস্টার জেনভিভ জানান, তিনি প্রতিদিনই পোপের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন, শুধু ঘটনার দিনই নয়।
এমনকি তাঁর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়াতেও তিনি যোগ দিয়েছিলেন। শনিবার, ২৬শে এপ্রিল স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় কার্ডিনাল কলেজের ডিন, কার্ডিনাল জিওভান্নি বাতিস্তা রে-এর পৌরোহিত্যে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।
এরপর পোপ ফ্রান্সিসের কফিন সেন্ট মেরি মেজর-এ নিয়ে যাওয়া হয়। এখানে সমাহিত করার সিদ্ধান্ত নিয়ে তিনি এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন, কারণ গত ১০০ বছরের বেশি সময়ে কোনো পোপকে এখানে কবর দেওয়া হয়নি।
ভ্যাটিকান সূত্রে জানা গেছে, অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার আগে দরিদ্র ও প্রান্তিক মানুষদের একটি দল, যাদের পোপ ফ্রান্সিস সবসময় ভালোবাসতেন, তাঁরা কফিনটিকে স্বাগত জানান। সেই অনুষ্ঠানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বহু নেতা, এক ডজনের বেশি রাজা ও ৫৫ জন রাষ্ট্রপ্রধান উপস্থিত ছিলেন।
তাঁদের মধ্যে ছিলেন প্রিন্স উইলিয়াম, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তাঁর স্ত্রী মেলানিয়া ট্রাম্প।
সিস্টার জেনভিভের এই আবেগপূর্ণ শ্রদ্ধা জানানো অনেকের হৃদয় ছুঁয়ে গেছে। ২৩শে এপ্রিল, বুধবার, সাধারণ মানুষের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকায় প্রবেশের প্রথম দিনেই তাঁকে দেখা যায়।
সাধারণত কার্ডিনাল, পুরোহিত ও বিশপদের জন্য সংরক্ষিত স্থানে তিনি প্রবেশ করেন। খবর অনুযায়ী, সিস্টার জেনভিভকে পোপের কফিনের কাছে গিয়ে কাঁদতে দেখা যায়, তখন উপস্থিত কেউ তাঁকে বাধা দেননি।
জানা গেছে, সিস্টার জেনভিভ এবং প্রয়াত পোপের প্রথম সাক্ষাৎ হয় ২০০৫ সালে। সিস্টার জেনভিভ তাঁর মাসি, যিনি নিজেও একজন সিস্টার ছিলেন, তাঁর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার জন্য রোম থেকে বুয়েনস আইরেসে গিয়েছিলেন।
তখন বুয়েনস আইরেসের বিশপ ছিলেন জর্জ মারিও বেরগোগ্লিও, যিনি পরে পোপ ফ্রান্সিস হন। সেই সময় বিশপ বেরগোগ্লিও সিস্টার জেনভিভের মাসির পুনরায় সমাধিস্থ করার অনুমতি দেন।
গত জুলাই মাসে, পোপ ফ্রান্সিস রোমের একটি এলাকা ওসটিয়াতে যান এবং সেখানে স্থানীয় এলজিবিটিকিউ+ কমিউনিটির সঙ্গে কাজ করা সিস্টার জেনভিভের সঙ্গে দেখা করেন। কোভিডের কারণে জনসাধারণের সঙ্গে সাক্ষাৎ বন্ধ থাকার পর, তিনি যখন আবার দেখা করতে শুরু করেন, তখন সিস্টার জেনভিভ প্রতি সপ্তাহে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে যেতেন এবং এলজিবিটিকিউ+ কমিউনিটির সদস্যদেরও সঙ্গে নিয়ে যেতেন।
সিস্টার জেনভিভ জানিয়েছেন, তিনি সবসময় পোপকে একটি বার্তা লিখে জানাতেন কারা তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসছেন।
তথ্য সূত্র: পিপলস